
ফাইল ছবি
ভাঙাচোরা নৌকায় ভূমধ্যসাগরের বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশকারীদের তালিকায় সবচেয়ে বেশি রয়েছে বাংলাদেশি নাগরিক। ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রনটেক্সের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০০ জন। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ কমলেও ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অভিবাসীর সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ৮৫০ জনে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি।
শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই ৮ হাজার ৪৬ জন এই রুটে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন — এবং তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক। অর্থাৎ, ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিরাই এখন শীর্ষে।
ফ্রনটেক্স জানায়, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশকারীদের মধ্যে বাংলাদেশ, মিসর ও মরক্কোর নাগরিকরা শীর্ষ তিন অবস্থানে রয়েছেন। যদিও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি জোরদার করায় সামগ্রিকভাবে ইউরোপে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ কিছুটা কমেছে।
অন্য রুটে অবৈধ প্রবেশের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকান রুটে ৫৮ শতাংশ, পশ্চিম বলকান রুটে ৪৭ শতাংশ এবং পূর্ব ইউরোপের স্থলসীমান্ত দিয়ে প্রবেশে ৩৬ শতাংশ কমেছে।
তবে মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় সাগরপথ এখনো সবচেয়ে ব্যস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ পথ—মোট অবৈধভাবে অভিবাসীর প্রায় ৪০ শতাংশই এই রুট দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছে।
অন্যদিকে, পশ্চিম ভূমধ্যসাগরীয় রুটে অনিয়মিত প্রবেশ ২৮ শতাংশ বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে এ রুটে ইউরোপে প্রবেশ বেড়েছে অর্ধেকেরও বেশি, যার মধ্যে আলজেরিয়া থেকে যাত্রা করা অভিবাসীই তিন-চতুর্থাংশ।
এছাড়া ফ্রান্স হয়ে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাও বেড়েছে ১৪ শতাংশ। এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৫৪ হাজার ৩০০ জন নাগরিক যুক্তরাজ্যে প্রবেশের চেষ্টা করেছেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, অবৈধ পথে ইউরোপে প্রবেশের সংখ্যা কিছুটা কমলেও মানবিক সংকট গভীর রয়ে গেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে কমপক্ষে ১ হাজার ২৯৯ জনের মৃত্যু বা নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে।