
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সহিংসতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে সংঘাত এড়িয়ে সংযম দেখানোর পরামর্শ দেন এবং হাদির পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনার আহ্বান জানান।
কমনওয়েলথ মহাসচিব শির্লে বোচওয়ে এক বিবৃতিতে হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানান। সংবাদকর্মীসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এক বিবৃতিতে সাম্প্রতিক সহিংসতা রোধে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে। হাদির হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলাকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর গুরুতর আঘাত উল্লেখ করে সংস্থাটি বলে, রাজনৈতিক সহিংসতা ও আইনের শাসন ব্যাহত হওয়ায় নাগরিক অধিকার হুমকির মুখে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও হাদির হত্যাকাণ্ড ও পরবর্তী সহিংস ঘটনার দ্রুত, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে। সংবাদমাধ্যম অফিসে ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগ, সামাজিক কর্মী নির্যাতন ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পোশাকশ্রমিককে হত্যার নিন্দা জানিয়ে সহিংসতাকারীদের বিচারের আওতায় আনার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এক বিবৃতিতে সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। হাদির হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সংবাদমাধ্যম–সংস্কৃতি–শিল্প প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলার নিন্দা জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
সার্বিকভাবে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ বাড়ছে। শান্তি, নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষায় দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান অব্যাহত রয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে।