প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নতির কল্যাণে ল্যাপটপ, ট্যাব, স্মার্টফোনের মতো পণ্যসমূহ এখন মানুষের হাতে হাতে। আর দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবার যুগে এসব ডিভাইসের অন্যতম ব্যবহার যে অন্তর্জালে ঘোরাঘুরি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে ইন্টারনেটের দুনিয়াতেও সিংহভাগ মানুষের বিচরণ সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয়। প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে নিজেদের রীতিমতো রোল মডেলের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া কোরিয়ানরাও এই সিংহভাগের বাইরে নয়। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা বলছে, কাকাও-টক, ফেসবুক, টুইটারের মতো মাধ্যমগুলো কোরিয়ানদের জীবনধারাই নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে দিয়েছে। ক্রমেই যান্ত্রিক হতে থাকা সমাজে যারা পরিবার, বন্ধু-স্বজনদের সাথে সশরীরে সাক্ষাতের সুযোগটুকু পাচ্ছেন না, বাহারি নামের সোশ্যাল মিডিয়াগুলো তাঁদের যেন হাপ ছেড়ে বাঁচিয়েছে।
সমীক্ষার ফল বলছে, ৩ কোটি ৭০ লাখ (মোট জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশ) কোরিয়ান প্রতিদিন কাকাও-টকে ছয়শ’ কোটির বেশী বার্তা আদানপ্রদান করে থাকেন। আর দিনের হিসেবে ৮৩ লাখ কোরিয়ান ফেসবুক ব্যবহার করেন।
বলাই বাহুল্য, বিশ্বের অন্যান্য অংশের মতো এখন কোরিয়াতেও তথ্য আদানপ্রদানে মূলধারার সংবাদপত্র বা টিভি চ্যানেলগুলোর চেয়ে বেশী ভূমিকা রাখছে এসব সোশ্যাল মিডিয়া। একটি ঘটনা ঘটার মুহূর্তের মধ্যেই খবরটি ছড়িয়ে পড়ছে ফোন থেকে ফোনে।
তবে তথ্য বিনিময়ের এই অবাধ স্বাধীনতার নেতিবাচক প্রভাবও মিলতে শুরু করেছে। একটি স্বীকৃত গণমাধ্যম যেখানে খবর প্রকাশের আগে সেটির গ্রহণযোগ্যতা সঠিকভাবে যাচাই করে নেয়, একজন সাধারণ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি খবর ছড়িয়ে দেয়ার আগে ততোটা ভেবে দেখছেন না। নামে-বেনামে ছড়াতে থাকা অনেক গুজব অনেক সময়ই অনেকের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যেসব খবর ছড়ায় সেগুলো যতোটা না বস্তুনিষ্ঠ তার চেয়ে ঢের বেশী আবেগতাড়িত। এর ফলে কোন খবরটি সঠিক আর কোনটি পক্ষপাতদুষ্ট গুজব তা যাচাই করা দিনকে দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।