ফেলানী হত্যার ৭ বছর আজ। ২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের চৌধুরীহাট সীমান্ত চৌকির কাছে কাঁটাতারের বেড়ায় নিহত কিশোরীটির মরদেহ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে। ৭ বছরেও সুবিচার না পাওয়ায় দেখা দিয়েছে ন্যায় বিচারের প্রশ্ন।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় ফেলানী। সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় গুলি করা হয় তাকে।
ফেলানীর মৃত্যুর কয়েকঘণ্টা পর বিএসএফ লাশ নামিয়ে ভারতে নিয়ে যায়। এরপর ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে ৮ জানুয়ারি শনিবার লাশ ফেরত দেয় বিএসএফ। বাংলাদেশে আরেক দফা ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর ৭৩ ঘণ্টা পর ফেলানীর লাশ দাফন হয়।
এ হত্যা মামলার বিচারে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারের বিএসএফের বিশেষ আদালতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে ভারত সরকার। ১৯ অগাস্ট আদালতে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফ সাক্ষ্য দেন। বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল হক খালেদ এবং কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিংকন।ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত।
ওই রায় প্রত্যাখ্যান করে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনারের কাছে মানবাধিকার সংগঠন আসকের (আইন ও সালিশ কেন্দ্র) মাধ্যমে আবারও বিচারের দাবি করেন ফেলানীর বাবা। এ বিচারেও রায় একই থাকে।
এরপর ন্যায়বিচার চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে পরপর দুটি রিট করা হলেও আজও শুনানি হয়নি। এ অবস্থায় আগামী ১৮ জানুয়ারি একই সঙ্গে ওই দুই রিটের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে ভারতেও অনেক সমালোচনা হয়েছে। মামলা ও বিচারিক কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা এবং নিন্দার ঝড় ওঠে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও।
বিচারের সর্বশেষ অগ্রগতি নিয়ে ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ-মাসুম-এর একজন কর্মকর্তা কিরিট রায়ের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, ” এই মামলা ঝুলে থাকার সুর্নিষ্টি কোন কারণ নেই। এটা পড়ে আছে। যে কোন দিন এটা তালিকায় আসবে। সেই সময় আবার মামলা হবে”।
“সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কিন্তু সেই অভিযোগ হয় পাচারের নয়তবা গরু পাচারের, অভিযোগ হয় ফেনসিডিল পাচারের কিন্তু সব ক্ষেত্রে তারা (আইন শৃঙ্খলা বাহিনী) আত্ম রক্ষার্থে গুলি চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে ।এবং সেই রকম ভাবেই তারা থানায় অভিযোগ দায়ের করে যে তারা আক্রান্ত হয়েছ। কিন্তু ফেলানীর ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আলাদা। সে নিরস্ত্র ছিল সে একটা মেয়ে ছিল, সেই মেয়েকে গুলি করে হত্যা করা হয়” বলেন কিরিট রায়।
তিনি বলেন, মাসুমের পক্ষে আমি মামলা করেছি, আর ফেলানীর বাবা তাকে দিয়ে করানো হয়েছে বলে তিনি জানান’।
সৌজন্যে: অর্থসূচক