বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সমকামিতা শুধু অবৈধই নয়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর ওই সব দেশে সমকামীদের বিয়ে আরো বেশি শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত।
তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সমকামীদের ব্যাপারে নমনীয় হলেও দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে তাদের বিয়ে নিষিদ্ধ ছিল। শুক্রবার দেশটির সর্বোচ্চ আদালত সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের সবগুলোতে সমকামীদের বিয়ের অনুমতি দেওয়ার পক্ষে মত দেন আদালত। তবে তাদের এই সিদ্ধান্ত দেশের কোনো আইন নয় বলে জানান আদালত।
গত অক্টোবরে দেশটির পাঁচটি অঙ্গরাজ্যে সমকামী বিয়ের অনুমতি চেয়ে করা রিটের শুনানিতে অংশ নিতে বিচারকরা অস্বীকৃতি জানানো কয়েক মাস পর এ রায় দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।
ঐতিহাসিক ওই রায়কে নিজেদের বিজয় হিসেবে মনে করছে সমকামীদের অধিকার রক্ষা সংগঠনগুলো। এর মাধ্যমে দেশটিতে সমলিঙ্গের মধ্যে বিয়ের মাত্রা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও দেশটির ৩৬টি অঙ্গরাজ্যে সমলিঙ্গের বিয়ের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেশটির ১৪টি অঙ্গরাজ্যে এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল এতদিন।
শুক্রবার এ-সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে ১৫ সমলিঙ্গের দম্পতির অংশ নেন। এ সময় বিচারকরা বলেন, ‘তাদের (সমলিঙ্গের লোকদের) বিয়ে করার মৌলিক অধিকার রয়েছে এবং তারা অন্যান্য মানুষের মতো সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। আজ তাদের সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করা হলো এবং তাদের প্রতি বিভিন্ন বৈষম্যমূলক আচরণ ও প্রতিবন্ধকতা নিষিদ্ধ করা হলো। এখন থেকে তাদের সন্তানদের প্রতি নির্যাতন ও অমানবিক আচরণও অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।’
সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন আইনজীবী জন ডব্লিউ ডেভিসন বলেন, ‘দীর্ঘদিন লড়াইয়ের পর আমরা বিজয়ী হয়েছি। এটা সমকামীদের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করবে এবং বৈষম্যমূলক আচরণ থেকে মুক্তি পাবেন তারা।’
আদালতের এ সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেছেন রক্ষণশীল নেতারা। তারা বলেছেন, ভোটার ও আইনপ্রনেতাদের মাধ্যমে বিষয়টি আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনার সুযোগ আদালতের রয়েছে। বিয়ে একটি সমাজের মৌলিক অধিকার। এটি একটি সমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত সমাজে নীতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তবে এই বিষয়ে ওবামা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তথ্যসূত্র : বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।