দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো ওয়ানডেতে জয় পেল বাংলাদেশ। আর এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা ফেরাল টাইগাররা। প্রোটিয়াদের ১৬২ রানে অলআউট করে বাংলাদেশের জয়ের ভিতটা তৈরি করে দিয়েছিলেন মুস্তাফিজ, রুবেল, নাসিররা। আর দারুণ ব্যাটিংয়ে জয়ের বাকি কাজটুকু সারলেন সৌম্য-মাহমুদউল্লাহরা।
রোববার টস জিতে আগে ব্যাট করে ৪৬ ওভারে মাত্র ১৬২ রানে অলআউট হয় প্রোটিয়ারা। জবাবে সৌম্য-মাহমুদউল্লাহর ফিফটিতে ৭ উইকেট ও ১৩৪ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
প্রথম ওয়ানডেতে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দিয়েছিলেন প্রোটিয়াদের অভিষিক্ত পেসার কাগিসো রাবাদা। আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও পর পর দুই ওভারে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসকে বিদায় করেন রাবাদা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রাবাদার প্রথম বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন তামিম (৫)।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক হাশিম আমলা। তবে বাংলাদেশের বোলারদের তোপের মুখে দাঁড়াতেই পারেনি তার দল। ৪৬ ওভারে মাত্র ১৬২ রানেই ইনিংস গুটিয়ে যায় প্রোটিয়াদের। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটাই দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এর আগে ২০০৭ বিশ্বকাপে ১৮৪ রানে অলআউট হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে সেটা পরে ব্যাট করে। আর ওই ম্যাচেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে একবার হারিয়েছিল বাংলাদেশ।
দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন ফাফ ডু প্লেসিস। প্রোটিয়াদের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দিতে ৩টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও নাসির হোসেন। ২টি উইকেট নেন রুবেল হোসেন। এ ছাড়া একটি করে উইকেট জমা পড়ে মাহমুদউল্লাহ ও মাশরাফির ঝুলিতে।
মিরপুরে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। মুস্তাফিজের বাউন্সার বল ঠিকভাবে খেলতে না পেরে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাব্বির রহমানকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কুইন্টন ডি কক। ৯ বলে ২ রান করেন এই ওপেনার।
শুরুতেই ডি ককের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন হাশিম আমলা ও ফাফ ডু প্লেসিস। তবে ইনিংসের ১৩তম ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে আমলাকে ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙেন রুবেল হোসেন। দারুণ এক ডেলিভারিতে আমলার স্টাম্প উপড়ে ফেলেনেএই সিরিজে আজই একাদশে সুযোগ পাওয়া রুবেল। ৩৭ বলে ২২ রান করেন আমলা। আমলা-প্লেসিস দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ২৯ রান।
এরপর ইনিংসের ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন নাসির হোসেন। ইনিংসে নিজের প্রথম বলেই রিলে রুশোকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান এই ডানহাতি স্পিনার। রুশোর ব্যাট থেকে আসে ৪ রান।
দলীয় ৯৫ রানে দক্ষিণ আফ্রিকার পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটান নাসির। এক প্রান্ত আগলে রাখা ফাফ ডু প্লেসিসকে বিদায় করে ইনিংসে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন ডানহাতি এই স্পিনার। ডিপ মিডউইকেটে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪১ রান করা ডু প্লেসিস।
৭ রানের ব্যবধানে জেপি ডুমিনিকে ফেরান মুস্তাফিজ। তার অফকাটারে শর্ট কভারে সাব্বিরকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডুমিনি। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১০০ রান। এরপর দলীয় ১১৬ রানে ক্রিস মরিসকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন রুবেল। মাত্র ১১৬ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে তখন ধুঁকতে থাকে প্রোটিয়ারা।
অষ্টম উইকেটে ফারহান বেহারদিন ও কাগিসো রাবাদা মিলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। তবে রাবাদাকে ফিরিয়ে ২২ রানের জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ। আরেকটি অফকাটারে রাবাদাকে বোল্ড করেন বাংলাদেশের এই তরুণ তুর্কি। এরপর দলীয় ১৬০ রানে নাসির দক্ষিণ আফ্রিকার নবম উইকেট তুলে নেন। আর ২ রান পরেই শেষ উইকেট নেন মাশরাফি। ৪৬ ওভারে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।