বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে ১৪ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট্রের সংলাপে কী আলোচনা হয়েছে তা একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে। ঐক্যফ্রন্টের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতেই ড. কামাল হোসেনের বেইলী রোডের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে সংলাপের বিস্তারিত গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরা হবে। এর আগে রাত ৯টায় এই রিপোর্ট লেখার সময় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৪দলের সাথে জাতীয় এক্যফ্রন্টের নেতাদের সংলাপের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্ষে ঢুকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর সংলাপের শুরুতেই সূচনা বক্তব্য দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার সূচনা বক্তব্যে বলেন, আজকে আপনারা এসেছেন গণভবন ও জনগণের ভবনে, গণভবনে আপনাদের স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্র অব্যাহত রেখেছি। বাংলাদেশের এই উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে আজকের এই আলোচনা বিরাট অবদান রাখবে বলে মনে করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশটা আমাদের সকলের, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমি বিচারের ভার আপনাদের ওপর ছেড়ে দেব। দীর্ঘ নয় বছর ১০ মাস হতে চলল আমরা সরকারে আছি। এই সময়ের মধ্যে দেশে কত উন্নয়ন করতে পেরেছি, সেটা নিশ্চয়ই আপনারা বিবেচনা করে দেখবেন। এতটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভালো আছে, তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে।
দিনবদলের যে সূচনা করেছিলাম, সেই দিন বদল হচ্ছে এটাকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন করে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, আমাদের মহান নেতা জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজকে সেই স্বাধীনতার সুফল যেন প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারে, সেটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের ২৩ নেতার সাথে সংলাপ শুরু করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২১ নেতা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান বিরোধের কারণে এই সংলাপের দিকেই আজ তাকিয়ে রয়েছে দেশের মানুষ। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতা তা সংলাপের মাধ্যমে নিরসন হবে।
ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে সংলাপে বসার আগ্রহের কথা জানিয়ে চিঠি দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী তাদের নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান। সেই আমন্ত্রণে ঐক্যফ্রন্ট গণভবনে সংলাপে গেলেও নৈশভোজে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে।
বিএনপি, গণফোরাম, জাসদ (জেএসডি) ও নাগরিক ঐক্য নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। গঠনের পরই ৭ দফা দাবি মানতে আন্দোলনে নামে তারা। তবে সংলাপের কারণে সেই আন্দোলনে কিছুটা ভাটা পড়েছে। ইতিমধ্যে ঐক্যফ্রন্ট সিলেট ও চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছে। কাল তাদের ঢাকায় সমাবেশ করার কথা আছে। এ ছাড়া ৬ নভেম্বর রাজশাহীতে সমাবেশ করার কথা রয়েছে।