Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ওআইসির সহকারী মহাসচিব পদে বাংলাদেশের প্রার্থীর পরাজয়ের কারন

oicবাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অপপ্রচার, বিলম্বে প্রার্থী দেয়াসহ বেশ কিছু কারণে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) সহকারী মহাসচিব (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি) পদে বাংলাদেশের প্রার্থী হেরে গেছেন।

বাংলাদেশ পেয়েছে ছয় ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী কাজাখস্তান ১২ ভোট পেয়ে এ পদে নির্বাচিত হয়েছে। শনিবার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে এশিয়া গ্রুপের ১৮টি রাষ্ট্র গোপন ব্যালটে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। দু’পক্ষই ক্যাম্পেইন করেছে টানা কয়েক মাস। বাংলাদেশের প্রার্থী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল আহসান ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ভোটার রাষ্ট্রগুলোতে গিয়ে এবং ঢাকায় তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়েছেন।

chardike-ad

সূত্র মতে, ঢাকায় এবারের ওআইসি পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের বৈঠক আয়োজন এবং সহকারী মহাসচিব পদে বাংলাদেশের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাতে বিভিন্ন দেশ সফর করতে ১২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্রটি আরও জানায়, পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছে। দেশটি প্রচার করে বাংলাদেশের প্রার্থী ইসলামের পক্ষের চেয়ে ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। পাকিস্তানের প্রচারে বলা হয়, তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র থাকাকালে বামপন্থী মার্কসবাদী রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। পাকিস্তানের এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচার চালাতে পারেনি বাংলাদেশ। ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলো মনে করেছে, বর্তমান সরকার অনেকটা ধর্মনিরপেক্ষ।

সূত্র আরও জানায়, পাকিস্তান শুরু থেকেই বাংলাদেশের প্রার্থীর বিপক্ষে ছিল। এশিয়া গ্রুপের তরফে ওআইসি’র সাবেক সহকারী মহাসচিব (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি) ছিলেন পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ নাঈম খান। তিনি কাজাখস্তানের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার করেন। তিনি বলেছেন, মধ্য এশিয়াকে এই পদে সুযোগ দেয়া উচিত।

নাঈম খান এও বলেছেন, এ বিষয়ে কাজাখস্তানের প্রার্থীর অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রসঙ্গত, কাজাখস্তানের প্রার্থী আসকার মসিনভ বর্তমানে ওআইসি সদর দফতরে পরিচালক হিসেবে কর্মরত। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, কাজাখস্তানের চেয়ে অনেক দেরিতে বাংলাদেশ তার প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে।

২০১৭ সালের ৯ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর কাজাখস্তান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে প্রথম ওআইসি বৈঠক আয়োজন করেছিল। কাজাখস্তানের প্রার্থী ওই সম্মেলনে ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। দেশটি প্রথমবারের মতো ওই সম্মেলনের আয়োজন করে তাদের শক্তি দেখিয়েছিল। ওআইসিতে প্রভাবশালী দেশ তুরস্ক ও কাজাখস্তানের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিয়েছিল।

ওআইসি’র আর্থিক ও প্রশাসনিক বিষয়ে সহকারী মহাসচিব পদে রাষ্ট্রদূত মুসা কুলাকলিকাইয়াকে প্রার্থী দিয়েছিল তুরস্ক। নির্বাচনে তুরস্ক ও কাজাখস্তান তাই ভোট আদান প্রদান করেছে। তুরস্কের প্রার্থীও নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে। পাকিস্তান সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশেষ করে ওআইসিতে বাংলাদেশবিরোধী প্রচার চালাচ্ছে।

ঢাকায় সদ্য সমাপ্ত ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন শেষে ঢাকা ঘোষণা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাস এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ঢাকা ঘোষণায় আয়োজক দেশের (বাংলাদেশ) ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে। পাকিস্তান এও বলেছে, জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যু সম্মেলনে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ তার পরপরই পাকিস্তানের এমন বিবৃতিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছে। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওআইসি সচিবালয়ের ইচ্ছাতে এই ঘোষণা প্রকাশ করা হয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কথা জানানো হয়েছে যে, ওআইসি সচিবালয়ের ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবে ঢাকা ঘোষণা প্রস্তুত করা হয়েছে।