Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিমানবন্দরে যাত্রীদের পাসপোর্ট জিম্মি করে টাকা আদায় করতো তারা

protarokবিদেশগামী শ্রমিকদের টার্গেট করে তারা। প্রথমে পরোপকারী সেজে নানাভাবে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়। আড্ডা জমিয়ে ম্যানপাওয়ার কার্ড করিয়ে দেওয়া, ভিসা চেকসহ নানা বিষয়ে সহায়তার কথা বলে যাত্রীর হাত থেকে পাসপোর্ট ও টিকিট নিয়ে নেয়। এরপর লাপাত্তা হয় প্রতারকরা। পরে ফোনে চাঁদা দাবি করে। কয়েক মাস ধরে এভাবেই হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বিদেশগামী শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। এই চক্রের দুজনকে রবিবার সন্ধ্যায় (১৮ আগস্ট) আটক করে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ। তারা হলো মো. দিদার আলম ও আরিফ মিয়া। বিমানবন্দরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের ৪ মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এই প্রতারকরা যাত্রী সেজে বিমানবন্দরে আসে। তাদের সঙ্গেও থাকে পাসপোর্ট, ব্যাগ। ফলে সহজে তাদের আলাদা করা যায় না। বিদেশগামী যাত্রীদের সঙ্গে আলাপ করে নিজেদের যাত্রী হিসেবে পরিচয় দেয় তারা।

chardike-ad

সূত্র জানায়, গত ১১ আগস্ট মৌলভীবাজারের মুসাহিদ মিয়া ওমান যাওয়ার উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। সে সময় তার সঙ্গে এক ব্যক্তির পরিচয় হয়। সে নিজেকে ওমান প্রবাসী হিসেবে পরিচয় দেয়। দুজনের মধ্যে ওমান বিষয়ে নানা আলোচনা হয়। ফ্লাইটের সময় এগিয়ে আসলে বহির্গমন টার্মিনালে গিয়ে লাইনে দাঁড়ান মুসাহিদ। এ সময় ওই ব্যক্তি মুসাহিদের পাসপোর্ট, ভিসা দেখে বলেন, ম্যানপাওয়ার কার্ড নেই। সে ঠিক করে দিতে পারবে। তার পরিচিত লোক আছে।

এরপর মুসাহিদের পাসপোর্ট ও টিকিট নিয়ে সে লাপাত্তা হয়ে যায়। পরে মুসাহিদের মোবাইলে ফোন দিয়ে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু এত টাকা কীভাবে দেবেন? দিশেহারা হয়ে পড়েন মুসাহিদ। শেষে ২ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানোর কথা হয়। তবে টাকা পাঠিয়েও পাসপোর্ট ফেরত পাননি মুসাহিদ। ওমান যাওয়া হয়নি তার। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন তিনি।

সূত্র জানায়, আরও এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাসপোর্ট জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছে আর্মড পুলিশ। এরপর প্রতারক চক্রকে ধরতে ফাঁদও পাতা হয়। একেক সময় একেক নম্বর থেকে ফোন করে টাকা চায় তারা। কারও কাছে ২০ হাজার, কারও কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করতো তারা।

বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশনস অ্যান্ড মিডিয়া) আলমগীর হোসেন বলেন, প্রতারকদের মধ্যে একজন ওমান প্রবাসী ছিল। সে ওমানগামী যাত্রীদের টার্গেট করতো। কথা বলে সহজ-সরলদের বোকা বানিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে সটকে পড়তো।

তিনি বলেন, যাত্রীদের অভিযোগ পেয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রতারকদের শনাক্ত করে নজরদারি বাড়ানো হয়। রবিবার সন্ধ্যায় দুজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে মুসাহিদের পাসপোর্ট উদ্ধার করে সোমবার (১৯ আগস্ট) ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

অতিরিক্ত এই পুলিশ সুপার বলেন, প্রতারণার হাত থেকে রক্ষার জন্য যাত্রীদের সচেতন হতে হবে। বিমানবন্দরের ভেতরে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ছাড়া অন্য কাউকে পাসপোর্ট, টিকিট, ব্যাগ কোনও কিছুই দেওয়া যাবে না বলে জানান তিনি।

সৌজন্যে- বাংলা ট্রিবিউন