Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

স্যামসাংকে ছুঁয়ে ফেলার অপেক্ষায় শাওমি

২০১২ সালের প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) পর থেকে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে স্যামসাং। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেষে স্মার্টফোন বাজারে দখল বিবেচনায় স্যামসাংয়ের সমপর্যায়ে পৌঁছেছে শাওমি। বর্তমান স্মার্টফোন বাজারে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাংয়ের তুলনায় দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে চীনভিত্তিক স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের পক্ষ থেকে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। খবর ইটি টেলিকম।

chardike-ad

কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের তথ্যমতে, মোবাইল ফোন বাজারে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে নকিয়া ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার করে স্মার্টফোন ও ফিচার ফোন তৈরি করছে এইচএমডি গ্লোবাল। ফিচার ফোন বাজারে নকিয়া ব্র্যান্ডের ডিভাইস আবারো শীর্ষ অবস্থান দখলে নেয়ার ধারাবাহিকতায় রয়েছে। ডিভাইস ব্যবসায় দীর্ঘ বিরতির পর চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে নকিয়ার প্রত্যাবর্তন ঘটে। বাণিজ্যিকভাবে নকিয়া ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেট বাজারে আসার প্রথম প্রান্তিক শেষে ফিচার ফোন বাজারে শীর্ষ চারে জায়গা করে নিয়েছে। শিগগিরই ফিচার ফোন বাজারে মাইক্রোম্যাক্সকে পেছনে ফেলবে নকিয়া ব্র্যান্ডের ফিচার ফোন।

কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের সহযোগী পরিচালক তরুণ পাঠক বলেন, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে শাওমির বাজার দখল ২২ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছেছে। বাজারটিতে এখন ২২ দশমিক ৮ শতাংশ দখল নিয়ে শীর্ষ অবস্থান দখলে রেখেছে স্যামসাং। শাওমির রেডমি নোট ৪ চলতি বছরের জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত স্মার্টফোন বাজারে সর্বাধিক বিক্রি হওয়া ডিভাইস তালিকায় অবস্থান ধরে রেখেছে। ডিভাইসটির কল্যাণে শাওমি ব্র্যান্ডের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯২ শতাংশ।

বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে শাওমি কবে নাগাদ স্যামসাংকে ছাড়িয়ে যাবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তরুণ পাঠক বলেন, বাজার দখল বিবেচনায় শাওমি আগামী এক মাসের মধ্যে স্যামসাংকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ক্রমবর্ধমান বাজারটির নেতৃত্বে পৌঁছানোটা বেশ সময়সাপেক্ষ হবে। ডিভাইস বিক্রির জন্য শুরু থেকে অনলাইন চ্যানেল ব্যবহার করে আসছে শাওমি। তবে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটিকে অফলাইন ডিভাইস বিক্রি বাড়াতে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে স্মার্টফোন বাজারের ৯ দশমিক ৫ শতাংশ দখলে নিয়ে তৃতীয় প্রতিদ্বন্দ্বীর স্থান দখলে নিয়েছে চীনভিত্তিক ভিভো। বার্ষিক বিবেচনায় ভিভোর প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২১ শতাংশ। ক্রমবর্ধমান ব্র্যান্ড হিসেবে ১১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে স্মার্টফোন বাজারের শীর্ষ পাঁচ প্রতিদ্বন্দ্বীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে অপো।

২০১৪ সালে স্মার্টফোনের গুরুত্বপূর্ণ বাজার ভারতে প্রবেশ করেছিল শাওমি। বাজারটিতে বাজেট সাশ্রয়ী একাধিক ডিভাইস দিয়ে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার সৃষ্টি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ভারতে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে অনলাইন প্লাটফর্মে বেশিরভাগ ডিভাইস বিক্রি করে আসছে শাওমি। তবে সাম্প্রতিক সময় দেশটিতে অফলাইন এমআই হোম স্টোর চালু এর ডিভাইস বিক্রি কয়েকগুণ বাড়িয়েছে।

স্যামসাং গত সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মুনাফা আয়ের পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে নকিয়ার প্রত্যাবাসনের কারণে ফিচার ফোন বাজারে এর ব্যবসা হুমকির মুখে পড়েছে।

কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের তথ্যমতে, ২৩ শতাংশ দখল নিয়ে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে স্যামসাং। এদিকে এইচএমডি গ্লোবাল ডিভাইস উৎপাদন শুরুর তিন মাসের মধ্যে নকিয়া ব্র্যান্ডের বাজার দখল দাঁড়িয়েছে ৮ শতাংশে। নকিয়া তুলনামূলক সাশ্রয়ী ডিভাইস দিয়ে ফিচার ফোন বাজারে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে।

এদিকে বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশন (আইডিসি) এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনভিত্তিক হুয়াওয়ে শিগগিরই বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে সরবরাহ বিবেচনায় মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপলকে ছাড়িয়ে যাবে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) স্মার্টফোন বাজারে হুয়াওয়ের দখল দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠানটির ডিভাইস সরবরাহ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ ইউনিট। একই প্রান্তিকে অ্যাপলের বাজার দখল ছিল ১২ শতাংশ এবং প্রতিষ্ঠানটির ডিভাইস সরবরাহ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ ইউনিট।

আইডিসির ইউরোপ অঞ্চলের গবেষণা পরিচালক ফ্রান্সিসকো জেরোনিমো বলেন, বর্তমান স্মার্টফোন বাজারের শীর্ষ দুই প্রতিষ্ঠান অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হুয়াওয়ে। চীনভিত্তিক ব্র্যান্ডটির দ্রুত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। হুয়াওয়ে চলতি বছর বা পরের বছরের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবসা খাতে অ্যাপলকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।