Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ভিসা বাণিজ্যের কারনে অভিবাসন ব্যয় বাড়ছে

malaysia-workerঅভিবাসন ব্যয় বাড়ছেই। কারন হিসেবে রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীদের দাপট, ভিসা বাণিজ্য, আর অসাধু জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সিন্ডিকেট। পাশাপাশি অদক্ষ জনশক্তির কারণে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। মনটাই মনে করছেন অভিবাসন খাত সংশ্লিষ্টরা।

আজ রোববার ‘স্বল্প ব্যয় ও নিরাপদ অভিবাসনে নাগরিক দায়িত্ব’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বক্তারা অভিবাসন ব্যয় বেশি হওয়া, কর্মীদের হয়রানি, নিরাপত্তাহীনতার নানা কারণ তুলে ধরেন। স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণের পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজিত সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ সেমিনারের আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

chardike-ad

বেশির ভাগ বক্তাই অভিবাসন ব্যয় বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে ভিসা বাণিজ্যের কথা তুলে ধরেন। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি মধ্যস্বত্বভোগীদের দাপটের কারণকেও চিহ্নিত করেন। তাঁদের মতে, বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের নিরাপদ ও টেকসই কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই।

আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব নমিতা হালদার বলেন, সরকার অভিবাসন ব্যয় কমাতে কাজ করছে। সম্প্রতি তাঁর সৌদি আরব সফরের কথা জানিয়ে সচিব বলেন, ভিসা বাণিজ্য বন্ধ করতে সৌদি সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। দেশেও যাতে এটা বন্ধ হয় সে বিষয়েও কাজ করছে সরকার। তিনি মানুষের অসচেতনতার কথা উল্লেখ করে বলেন, দালালদের বেশি টাকা দিয়ে মানুষ বিদেশ যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীরা কখনো প্রতারণার শিকার হয় না।

জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) মহাসচিব মো. রুহুল আমিন বলেন, শ্রমিকদের দক্ষতা নিশ্চিত করে বিদেশে গমন করাতে হবে। বিদেশ যাওয়ার আগে শ্রমিকদের অবশ্যই কর্মসংস্থানের নিশ্চিত করতে হবে। পাসপোর্ট ও ভিসা ব্যবস্থাকে সহজ করতে হবে।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সেলিম রেজা যোগ্য লোক বিদেশ পাঠানোর ওপর গুরুত্ব দেন। গৃহকর্মী-পরিচ্ছন্নতাকর্মী পাঠানোকে অসম্মানজনক মন্তব্য করে তিনি এ থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, দক্ষ লোক বিদেশে পাঠাতে হবে। ভাষাজ্ঞান ছাড়া অদক্ষ লোক বিদেশ যেতে দেওয়া হবে না এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নারীদের গৃহকর্মী বা পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে না পাঠিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দিয়ে দিয়ে দক্ষ কর্মী হিসেবে পাঠানোর ওপর গুরুত্ব দেন বায়রার যুগ্ম মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী।

বায়রার সদস্য আবদুল আলিম অভিযোগ করে বলেন, মালয়েশিয়ায় লোক পাঠানোর জন্য মাত্র ১০টি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া আছে। এ জন্য অভিবাসন ব্যয় ৩৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া থাকলেও ১০ গুন টাকা নিচ্ছে এজেন্সিগুলো।

অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন ওয়ারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুল হক বিদেশগামীদের নানা দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। অভিবাসন প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম দুর করে এ ক্ষেত্রে অভিবাসীদের সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া এবং কঠোর নজরদারির ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ওয়েজ অনার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ জুলহাস, বোয়েসলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরণ কুমার চক্রবর্তী, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বদরে মুনির ফেরদৌস, জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বে-ইস্টার্নের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারাহ আনজুম বারী, আরমান এয়ার ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. সাজ্জাদ হোসেন, হাসান আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ। -প্রথম আলো