Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

কালুরঘাট সেতু নির্মাণে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিলের (ইডিসিএফ) সাথে সরকারের ঋণ চুক্তি আগামী জুনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হবে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের ৪ হাজার কোটি দেবে বাংলাদেশ সরকার। মূল সেতু নির্মাণের জন্য ৮ হাজার কোটি টাকা দেবে ইডিসিএফ। দক্ষিণ কোরিয়া আগামী জুনে ঋণ চুক্তি করতে চায় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী। গতকাল সিআরবিতে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এই তথ্য জানান।

chardike-ad

কালুরঘাট সেতু নির্মাণের বিষয়টি দ্রুত এগুচ্ছে এবং এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া আছে জানিয়ে তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতুর নির্মাণের বিষয়টি দ্রুত এগুচ্ছে। সেতুর ডিপিপি হয়ে গেছে। সম্প্রতি দাতা সংস্থার সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। সেতুর জন্য ১২ হাজার কোটি টাকার মতো লাগবে। এখানে ৪ হাজার কোটি টাকা জিওবি ফান্ড। বাকি টাকা দেবে দাতা সংস্থা। দক্ষিণ কোরিয়ান ইডিসিএফ কথা দিয়েছে, তারা আগামী জুনে সরকারের সঙ্গে ঋণচুক্তি করতে চায়। এটি হয়ে গেলে আমরা কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করব। তিনি জানান, দক্ষিণ কোরিয়ার ইডিসিএফ সফট লোন দিচ্ছে।

কালুরঘাটে নতুন রেল ও সড়ক সেতুর জন্য একাধিক সম্ভাব্যতা যাচাই এবং সেতুটির নকশা তৈরি ও বদল করতে ১০ বছর পার করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে সেতুটি তৈরি করতে এখনকার সময় অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয় প্রায় ১২ গুণ বেশি হতে যাচ্ছে।

২০১৪ সালে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, ব্রিটিশ আমলের সিঙ্গেল লেন রেল ও সড়ক সেতুটি ব্যবহার না করে সেখানে নতুন সেতু নির্মাণের। এর জন্য ২০১৮ সালে একটি সিঙ্গেল লেন রেললাইন ও ডাবল লেন সড়ক সেতুর জন্য বিশদ প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রস্তুত করা হয়েছিল। সেই ডিপিপি অনুযায়ী এই সেতুর জন্য ব্যয় হওয়ার কথা ছিল ১ হাজার ১৬৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। পরে সেই নকশা অনুযায়ী কাজ শুরু হয়নি।

পরবর্তীতে নতুন নকশা করা হয়। নতুন নকশা অনুযায়ী এখন সেতুটিতে ডুয়েলগেজ রেললাইন ও ডাবল লেন সড়ক থাকবে। এজন্য সেতুটির ব্যয় বেড়েছে প্রায় ১২ গুণ। এখন নতুন ডিজাইনে সেতু নির্মাণের জন্য প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা। দক্ষিণ কোরিয়া এই সেতুতে অর্থায়নের জন্য ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে।

নকশা পরিবর্তন ছাড়াও একাধিক সম্ভাব্যতা যাচাই, নির্মাণ সামগ্রীর উচ্চমূল্য এবং কর্ণফুলীতে চলাচলকারী নৌযানগুলোকে চলাচলের জায়গা দিতে সেতুর উচ্চতা বৃদ্ধিকে (ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স) মূলত ব্যয় বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়েছে।

নতুন সেতুটি নির্মাণ করতে ২০২৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। তাই পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখার জন্য পুরনো কালুরঘাট সেতুটি বুয়েটের পরামর্শে মেরামত করা হচ্ছে। কর্ণফুলী নদীর উপর ১৯৩১ সালে নির্মিত কালুরঘাট সেতুটি অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। তাই সেতুটি ব্যবহারের বিষয়ে সুপারিশ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে ৮ কোটি টাকায় বুয়েটের একটি বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগ দেয়। এখন বুয়েটের সেই পরামর্শ টিমের তত্ত্বাবধানে সেতুর সংস্কার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।