অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কানাডার সমান বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। শনিবার রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থাগুলোর সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অংশীদার হবে এমন প্রভাবশালী ২০টি দেশের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। গত ৬মে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক আউটলুকে আইএমএফ ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে প্র্রবৃদ্ধির যে প্রক্ষেপণ করেছে তাঁর আলোকে ব্লুমবার্গ-এর করা বিশ্লেষণে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ওই বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগামী অর্থবছর বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। আর সেই প্রবৃদ্ধিতে দশমিক ৯ শতাংশ অবদান রাখবে বাংলাদেশের অর্থনীতি। কানাডা অবদান রাখবে ১ শতাংশ। থাইল্যান্ড-স্পেনও ১ শতাংশ করে অবদান রাখবে।
আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের এই অবদান অব্যাহত থাকবে বলে ব্লুমবার্গ-এর গবেষণার বরাত দিয়ে তথ্য দেন মুস্তফা কামাল। ‘সে তথ্যের ভিত্তিতেই আমি বলছি, প্রবৃদ্ধিতে আমরা কানাডার সমান। স্পেন-থাইল্যান্ডের সমান। আর এটা আমার কথা নয়; আইএমফের কথা। বিশ্ব ব্যাংকের কথা।’ ‘শুধু তাই নয়, কয়েক দিন আগে ফিজিতে এডিবির বার্ষিক সম্মেলনেও বলা হয়েছে, চমকপ্রদ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।’
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ হওয়ার যে আভাস সরকার দিচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেম।
সরকারের কথার সঙ্গে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তিগুলোর তথ্য-উপাত্ত মেলে না দাবি করে সংস্থাটি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সরবরাহ করা তথ্য-উপাত্তগুলো পুনঃপর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছে।
গত জানুয়ারিতে টানা তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকার চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ হবে বলে আট মাসের (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) তথ্য হিসাব করে আভাস দিয়েছে।
সরকারের এই প্রাক্কলনের কাছাকাছি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের আভাস দিয়েছে এডিবি; তারা বলছে এই অঙ্ক ৮ শতাংশ হতে পারে। তবে বিশ্ব ব্যাংক বলছে, জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থাগুলোর এ সব সমালোচনার জবাবে মুস্তফা কামাল আরও বলেন, ‘তাদের কাজ তারা করবে; আমার কাজ আমি করবো। তবে তাদের হোমওয়ার্ক করে তথ্য দেয়া উচিৎ। আমি তথ্য নিয়ে কথা বলি। আমি মানে বাংলাদেশ…। আমি সঠিক তথ্যের ভিত্তিতেই কথা বলি।’
‘আমি কারো নাম বলছি, তবে অনেকেই অনুমানের ভিত্তিতে কথা বলেন। আমি তাদের চ্যালেঞ্জ করে বলছি…। আসেন, গোলটেবিল আলোচনায় বসি…। আমি বা বিবিএস যে তথ্য দিচ্ছে সেটা যে সঠিক তা প্রমাণ করে চাড়ব।’ ‘দুঃখ একটাই, বিশ্ব ব্যাংক-আ্ইএমএফ-এডিবি আমাদের প্রশংসা করছে। আর আমাদের এখানকার কয়েকজন সেটা মেনে নিচ্ছে না বা মেনে নিতে পারছে না।’ ‘এ সব সংগঠনের কাজই সরকারের সমালোচনা করা। তারা বছরে কিছু প্রোগ্রাম করে আর সরকারের সমালোচনা করে। এটা তাদের বাৎসরিক রুটিন হয়ে গেছে।’