বিশ্বকাপে খেলতে আসার আগে থেকেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল আফগান ক্রিকেট বোর্ড। হঠাৎ করে আসগর আফগানকে বাদ দিয়ে অধিনায়ক করা হয় গুলবাদিন নাইবকে। এ নিয়ে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিতে তৈরি হয় তুমুল বিতর্ক। সব পেছনে ফেলে তবুও তারা আসলো বিশ্বকাপ খেলতে।
কিন্তু বিশ্বকাপে এসেই বড় বিতর্কের জন্ম দিলো আফগান টিম ম্যানেজমেন্ট। ইনজুরির অজুহাতে তারা বিশ্বকাপ শুরুর পরপরই দল থেকে বাদ দিলো উইকেরক্ষক এবং ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদকে। পরিবর্তে দলে নিয়ে আসলো ইকরাম আলিখিলকে।
কিন্তু মোহাম্মদ শাহজাদ সরাসরি অভিযোগ করে বসলেন আফগান ক্রিকেট বোর্ডের বিপক্ষে। শাহজাদ জানিয়ে দিলেন, খেলার জন্য তিনি যথেষ্ট ফিট। জোর করেই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের সময়ই আহত হয়ে মাঠ থেকে উঠে যেতে হয় মোহামদ শাহজাদকে। তবুও বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে খেলেছেন শাহজাদ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে কোনো রান করতে পারেননি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১২ বলে করেন ৭ রান। দুই ম্যাচেই হারলো আফগানিস্তান।
হঠাৎই আনফিট ঘোষণা করে শাহজাদকে বাদ দেয়া হলো। দেশে ফিরে আসার পর তিনি ঘটা করে জানিয়ে দিলেন, জোর করেই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি লন্ডনে ডাক্তারের কাছে গিয়েছি। তিনি আমার হাঁটু থেকে কিছু পানি বের করে দিলেন এবং ঔষধ দিলেন। বললেন, দুই-তিনদিন বিশ্রাম নিলে আমি আবার খেলতে পারবো।’
যে দিন বাদ দেয়া হয়েছে, সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে শাহজাদ বলেন, ‘আমাদের একটি প্র্যাকটিস সেশন ছিল। ব্যাটিং-বোলিং, কিপিং, ফিল্ডিং- সবই হয়েছে সেখানে। লাঞ্চের সময় আমি আমার সতীর্থদের সঙ্গে বাসে করে টিম হোটেলে ফিরছিলাম। তখনই আমার মোবাইলে আইসিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটা দেখলাম। যেখানে বলা হলো, ফিটনেসের সমস্যার কারণে আমাকে বাদ দেয়া হয়েছে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের স্কোয়াড থেকে। ওই সময়ই জানতে পারলাম, আমি নাকি আনফিট।’
হঠাই সংবাদটা দেখার পর হতবুদ্ধি হয়ে যান শাহজাদ। তিনি বলেন, ‘আমি দলীয় ম্যানেজারকে বিষয়টা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। যিনি আমাকে প্রথমে পকেট থেকে ফোন বের করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটা দেখতে বললেন। তিনিসহ ডাক্তারের সঙ্গে কথা বললাম। ডাক্তার আমার অসহায় চেহারার দিকে তাকিয়ে বললো, এখন আর আমার করার কিছু নাই।’
এরপরই ক্রিকেটই ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন শাহজাদ। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারলাম কি সমস্যা হলো। তারা যদি আমার মাঝে কোনো সমস্যা দেখতে পেতো, তাহলে সেটা আমাকে জানাতো! তারা যদি না চায়, তাহলে আমি ক্রিকেটই ছেড়ে দেবো।’
নিজেকে আর ক্রিকেটেই দেখতে চান না শাহজাদ। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে আর ক্রিকেটে দেখতে চাই না। বিশ্বকাপে খেলা ছিল আমার কাছে একটা স্বপ্ন। ২০১৫ বিশ্বকাপের আগেও হঠাৎ করে আমাকে বাদ দেয়া হয়েছিল (ফিটনেস ঠিক নাই বলে)। এবার ঠিক একই কাণ্ড ঘটালো তারা। আমি আমার পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবো। আমার হৃদয় আর ক্রিকেটের মধ্যে নেই।’