Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

করোনার মধ্যেই ভোট দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া

korea-electionসারাবিশ্বে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এক ভয়াবহ আতঙ্ক তৈরি করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার প্রকোপ বাড়ছেই। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেনের মতো দেশগুলোও করোনার সঙ্গে পেরে উঠছে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনার প্রকোপ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে। লোকজনকে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে এবং অপ্রয়োজনের বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সারাবিশ্ব যখন করোনা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ঠিক এমন সময়ই দক্ষিণ কোরিয়ায় ভোট হচ্ছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপরই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চীনে করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকে।

chardike-ad

প্রথমদিকে চীনের পর করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল দক্ষিণ কোরিয়ায়। কিন্তু দেশটি এখন পর্যন্ত লকডাউন করা হয়নি। এখন পর্যন্ত সেখানে ১০ হাজার ৫শ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২২২ জন। অপরদিকে ৭ হাজার ৫শ ৩৪ জন ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছে। তবে ৫৫ জনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।

korea-electionদেশটিতে ৪ কোটি ৪০ লাখ ভোটার পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট দিচ্ছে। এই ভোটে ৩শ জন সংসদ সদস্যকে বেছে নেবেন দেশটির ভোটাররা। ভোটের আগে সব ভোটারের শরীরের তাপমাত্রা ভোটকেন্দ্রের দরজা থেকেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। ভোটের লাইনে একজন ভোটার থেকে অপরজনকে অবশ্যই কমপক্ষে এক মিটার দূরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া যারা এখন সেলফ কোয়ারেন্টাইনে আছেন তারাও ভোট দেওয়ার অনুমতি পেয়েছেন। তারা ভোট দিতে বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভোট অনুষ্ঠিত হবে। অনেক ভোটার বলছেন, করোনার কারণে যে মহামারি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সে কারণেই তাদের কাছে ভোট এখন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ইতিমধ্যে রেকর্ড ৫০ লাখের বেশি আগাম ভোট পড়েছে। ছোট ছোট জটলায় ভোটের প্রচার চালিয়েছেন প্রার্থীরা। মাস্ক পরেই দিয়েছেন ভাষণ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি, বেতনভাতা এবং উত্তর কোরিয়ার নিউক্লিয়ার কর্মসূচি নির্বাচনে প্রভাব রাখার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মোকাবেলায় দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মুন জে ইনের নেয়া পদক্ষেপ বাকি সব কিছুকে আড়াল করে দিয়েছে।

korea-electionরাজধানী সিউলের ইয়ুন্সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ইয়াং সেয়ুং হাম বলছেন, জাতীয় দুর্যোগ বা সংকটের সময় সাধারণত ক্ষমতাসীন দল রক্ষণশীল আচরণ করে। কিন্তু করোনা মহামারীর গতি কমিয়ে আনতে পারায় সরকারি দলের পক্ষে চলে গেছে স্রোত।

দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন দিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ জনের কম। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে এটি ৯০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ব্যাপক হারে পরীক্ষা, নজরদারি, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা ও বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করে এ সফলতা পেয়েছে কোরিয়া।

কোরিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণ ও সুরক্ষা কেন্দ্রের (কেসিডিসি) তথ্যমতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫৯১ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছে ২২৫ জন। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৭ হাজার ৬১৬ জন।

নির্বাচনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কায় আছেন দেশটির লাখো নাগরিক। তবে কেন্দ্রে লম্বা সময় ধরে অপেক্ষা করতে হলেও ভোট চালিয়ে যাওয়ারও পক্ষে মত দিয়েছেন দেশটির অনেক নাগরিক।