Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

quata movementকোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেয়ায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২২ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিয়েছে ইবি শাখা ছাত্রলীগ।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

chardike-ad

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিনের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ আবাসিক হল থেকে তাদের বের করে দেয়া হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের হাবিব, আশরাফুল, মেহেদী, লিমন, ফয়সাল, শাকিল, মেহেদী হাসান, নাইম, শিমুল, একই শিক্ষাবর্ষের ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিল্লাল হোসাইন, রাসেল মুরাদ, আশিকুর রহমান, আশিক, রহমান, রাশেদ, রবিউল, আশিক, আশানুর মোল্লা, মেহেদী হাসান, রাব্বুল, গোলাম রাব্বী। একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আশিক ও নিশাত। আরবি ভাষা সাহিত্য বিভাগের আব্দুর রশিদ। এর মধ্যে বিল্লাল হোসাইন ও আশানুর মোল্লা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে দলীয় কর্মীদের অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়।কিন্তু যৌক্তিক আন্দোলনে দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ অসংখ্য ছাত্রলীগকর্মী এতে অংশগ্রহণ করে।এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চিহ্নিত দুই মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ অন্তত ৩৫ কর্মীকে সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় ছাত্রলীগকর্মী সালাহউদ্দিন আহমেদ সজল।

তারা জানায়, বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে মেহেদী, আশরাফুল ইসলাম ও হাবীবসহ ১০-১২ কর্মীকে তার কক্ষে (৩৩৫) ডেকে নেন ছাত্রলীগকর্মী সালাহউদ্দিন আহমেদ সজল। এ সময় তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হয় বলে জানান তারা। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার আলটিমেটাম দেন সজল। তিনি বলেন, তোমরা যে অপরাধ করেছ এটি ক্ষমার যোগ্য নয়।

এর আগে সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন হলে এসে তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে হল ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় তাদের হাসিমুখে বের হয়ে যেতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বিল্লাল হোসাইন বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমি ছাত্রলীগ করি। আমি ছাত্রলীগকে ভালোবাসি। যৌক্তিক আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলন করেছি। দেশরত্নের ঘোষণায় আমাদের আন্দোলন সফল হয়েছে। হল ছেড়ে চলে যেতে আমার কোনো দুঃখ নেই। আমি স্যালুট করি বঙ্গবন্ধুকে। আমি স্যালুট করি আমার ছাত্রলীগ নেতাদের।

জানা গেছে, ছাত্রলীগকর্মীরা হল থেকে একই সঙ্গে দলবেঁধে বের হয়ে যান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি স্যালুট জানিয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, আমি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি একজন ছাত্র, এ জন্য কোটা সংস্কারের যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এটি আমার অপরাধ নয়।

তবে পরে চাপে পড়ে তাদের আবার হলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে এবং এসময় তাদের কাছ থেকে লিখিত নেয়া হয়েছে যে, তারা দলীয় বিষয়ের কারণে হল থেকে বের হয়ে গিয়েছিলো। এর সঙ্গে কোটা আন্দোলনের বিষয় জড়িত না।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে তারা হল থেকে চলে গেছে। তাদের বুঝিয়ে আবার হলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

হল প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি খুবই জঘন্য কাজ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, এখনও পর্যন্ত কোনো ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সুত্রঃ যুগান্তর