Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

জানা গেল ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনার কারণ

planecrashএক-দুজন তো নয়, ৭১ জন মানুষের প্রাণ! বিমান দুর্ঘটনা মানেই অনেক মৃত্যু, তার ওপর সেই দুর্ঘটনা সারা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল আরেক কারণে। এই দুর্ঘটনার কারণে ব্রাজিলের একটি ক্লাবের দলের প্রায় সবাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। কোচ, খেলোয়াড়, কর্মীদের মধ্যে বেঁচে ফিরেছেন মাত্র তিনজন। ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনার একটি সেই শাপেকোয়েন্স ট্র্যাজেডির কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হলো। বিমানের জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় ঘটেছে এই দুর্ঘটনা!

বিমানে আর অল্প কিছু জ্বালানি থাকলেও হয়তো বেঁচে যেত এতগুলো প্রাণ! ২০১৬ সালে কলম্বিয়ার বিমানবন্দরে বেশ কাছে পাহাড়ে লামিয়া এয়ারলাইনসের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানবন্দরকে আড়াল করে রাখা একটি পাহাড়চূড়া পেরোতে পারলেই নিরাপদে অবতরণ করতে পারত। কাল কলম্বিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ২০১৬ সালের এই বিমান দুর্ঘটনার কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে জানাল। তাদের দাবি, বলিভিয়ান এয়ারলাইনটি উড়াল দেওয়ার আগে ওই বিমানে পর্যাপ্ত জ্বালানি নেয়নি।

chardike-ad

সেই মৌসুমে শাপেকোয়েন্স অখ্যাত একটি দল হয়েও অবিশ্বাস্য রূপকথার জন্ম দিয়ে উঠে গিয়েছিল কোপা সুদামেরিকানার ফাইনালে। দক্ষিণ আমেরিকায় ক্লাব ফুটবলের ফাইনালেও দুটি ম্যাচ হয়। দুই লেগের প্রথমটি খেলতেই কলম্বিয়ায় উড়ে আসছিল শাপেকোয়েন্স। সেই দলটির কী নির্মম পরিণতি! এটি আরও বেশি ব্যথিত করেছিল ফুটবলপ্রেমীদের! এমনকি ফিরতি লেগে কলম্বিয়ার দলটি সম্মান দেখিয়ে নিজেদের ম্যাচ ছেড়ে দেয়। শাপেকোয়েন্সকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।

এই ঘটনা আরও বেশি চাঞ্চল্য তৈরি করেছিল এ কারণে, ফুটবল দলকে বহন করার কারণে বিশেষায়িত ছিল বলিভিয়ার এই এয়ারলাইন। লামিয়ায় মেসি-নেইমারসহ ইউরোপে খেলা তারকারাও উঠতেন বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে এলে। এমন একটি বিমান কর্তৃপক্ষ কীভাবে এত দায়িত্বহীন হয়? তখনই কম জ্বালানি নিয়ে বিমানটির উড়াল দেওয়ার খবর প্রকাশ পেয়ে গিয়েছিল। অধিকতর তদন্তে সেটি প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি কলম্বিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের।

বলিভিয়ার সান্তা ক্রুজে মাঝবিরতি নেওয়ার পর বিমানটির কলম্বিয়ার মেদেলিনে উড়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু সান্তা ক্রুজ থেকে বিমানটি ৯ হাজার ৭৩ কেটি জ্বালানি নিয়ে উড়াল দেয় বলে উঠে এসেছে তদন্তে। ওই পথের দূরত্ব অনুযায়ী এই পরিমাণ জ্বালানি যথেষ্ট ছিল না। প্রয়োজনের তুলনায় বিমানগুলোকে সব সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ জ্বালানি বেশিই রাখতে হয়। বিমানটি তা মানেনি।

এখন একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়া লামিয়া এয়ারলাইনস সে সময় আর্থিক সংকটের মধ্যে চলেছে। তদন্তে জানা গেছে, শুধু ওই উড়ানে নয়, এর আগেও বেশ কয়েকবার কম জ্বালানি নিয়ে তারা বিমান পরিচালনা করেছে। ভাগ্যক্রমে তখন দুর্ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সেবার আর রক্ষা পায়নি বিমানটি।

তদন্তে জানা গেছে, বিমানের পাইলটরা তেলের এই ঘাটতির ব্যাপারটি জানতেন। কিন্তু তাঁরা কলম্বিয়ার এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলকে এ ব্যাপারে অভিহিত করেননি, রানওয়েতে নামার জন্য বিমানটিকে আগে সুযোগ দিতেও অনুরোধ করেননি। শুধু তা-ই নয়, বিমানটি অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ৫০০ কেজি বেশি ওজন বহন করছিল।

ওই দুর্ঘটনায় কেবল ছয়জন যাত্রী বেঁচে ফেরেন।