ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হল মসজিদ প্রতিষ্ঠার প্রায় ২ যুগেও কোন সংস্কার হয়নি। দীর্ঘ দিন মূল মসজিদ, অজুখানা ও টয়লেটে সংস্কার কাজ না করায় নষ্ট হচ্ছে মসজিদ ও অজুখানার ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ। অযু খানার সাথে টয়লেট সংযুক্ত কিন্তু নিয়মিত টয়লেট পরিষ্কার না করায় টয়লেট ও অযুখানা উভয়ই দুর্গন্ধ থাকতে দেখা যায। কয়েক দফায় মসজিদ সংস্কারের আবেদন করলেও বিষয়টি বিগত কোন প্রশাসনই তা বাস্তবায়ন করেনি।
১৯৯৭ সালে সাদ্দাম হোসেন হল ও শহীদ জিয়াউর রহমান হলের মধ্যবর্তী স্থানে আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য নির্মিত হয় মসজিদটি। এর পর কেটে গেছে প্রায় ২ যুগ। ওয়াক্তিয়া নামাজে ক্যাম্পসের সবচেয়ে বেশী মুসল্লি নামাজ আদায় করে এখানে। মেঝের মোজাইক ক্ষয় হয়ে কোথাও উচু-নিচু কোথাও ধারালো হয়ে গেছে। এতে নামাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ সিজদা দিতে কষ্ট হয় মুসল্লিদের। প্রয়োজনের তুলনায় ফ্যান কম। ফ্যানগুলো পুরাতন এবং নষ্ট হওয়ার পর ঠিক মতো মেরামত হয় না। তাই ফ্যান ঘুরলে শব্দ হয়। এতে নামাজের সময় ইমামের কেরাত শুনতে মুসুল্লিদের বেগ পেতে হয়। একতলা মসজিদ হওয়ায় গরমের সময় তীব্র তাপে কষ্ট করেই নামাজ আদায় করতে হয়। মসজিদের ভেতর-বাইরে নেই পর্যাপ্ত লাইটং।
দীর্ঘ সময় মেরামত না করায় সামান্য বৃষ্টিতে ছাদ বেয়ে পনি পড়ে। খুলে পড়ছে দেয়ালসহ বিভিন্ন জায়গায় প্লাস্টার। রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে মূল দরজার পাটাতন। রঙ পুরোনো হয়ে শতবর্ষী দেয়ালের রূপ নিয়েছে। ভেঙ্গে গেছে অযুখানার বসার স্থান। অজুখানার চল্লিশ শতাংশ ট্যাপ নষ্ট। একমাত্র টয়লেটও পরিষ্কার করা হয়না নিয়মিত। মসজিদের আশেপাশের নিয়মিত পরিষ্কার না করায় আবর্জনার গন্ধ আসে ভিতরে। এত সমস্যার মধ্যেও নিয়মিত নামাজ আদায় করে যাচ্ছে মুসল্লিরা।
মসজিদের সংস্কারের জন্য হল কতৃপক্ষ থেকে কয়েক ধাপে প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তবে অবহেলা ও গুরুত্বহীনতায় কোন সংস্কার কাজে হাত দেয়নি তারা। ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর প্রকৌশল অফিস থেকে অর্থ ও হিসাব শাখায় ৫৪ হাজার টাকার চাহিদাপত্র প্রেরণ করা হয়। এর পরও মসজিদ সংস্কারে কোন বরাদ্দ দেয়নি কতৃপক্ষ।
জিয়া হলের এক আবাসিক ছাত্র বলেন, ‘রুমে নামাজের পরিবেশ নাই। তাই নামাজ পড়তে হলে মসজিদেই আসতে হয়। রুমমেট ও তার বন্ধু সিগারেটসহ বিভিন্ন ধরনের নেশা রুমেই খায়। নিষেধ করলে অনেক সময় চড়াও হয়।’
মসজিদের ইমাম বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, তারা যেন দ্রুত মসজিদটি সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল বলেন, ‘আমরা হিসাব শাখায় চাহিদাপত্র প্রেরণ করেছিলাম। কিন্তু পরে আর কোন অগ্রগতি হয়নি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. সেলিম তোহা বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে মসজিদের সংস্কারের বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব এগিয়ে নেওয়া হবে। বর্তমান কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সেক্টরকে সমানভাবে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে।