Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

তীব্র হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া-জাপান বাণিজ্য বিরোধ

korea-japanদক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের পারদ আরেক ধাপ উপরে উঠেছে। সর্বশেষ দক্ষিণ কোরিয়া বলছে, তারা জাপানের শিল্প খাতের ওপর অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনবে। খবর সিএনবিসি। গতকাল এক বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থমন্ত্রী হং ন্যাম-কি জানান, জাপানের উপকরণ, উপাদান ও যন্ত্রাংশ শিল্পের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে বিস্তৃত পরিকল্পনা গ্রহণ করছে আমাদের সরকার।

১ জুলাই দক্ষিণ কোরিয়ায় তিনটি হাই-টেক উপাদান রফতানিতে টোকিওর বিধিনিষেধ আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরো তিক্ত হতে শুরু করে। ওই উপাদানগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম প্রধান রফতানি পণ্য সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। এদিকে সাদা তালিকা থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার নাম সরিয়ে ফেলেছে জাপান। রফতানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বিশ্বস্ত দেশগুলোকে ওই সাদা তালিকায় রেখে থাকে টোকিও। জাপান থেকে আমদানীকৃত হাইড্রোজেন ফ্লোরাইড দক্ষিণ কোরিয়া হয়ে উত্তর কোরিয়ায় পৌঁছে বলে অভিযোগ টোকিওর। অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিউল।

chardike-ad

গত বৃহস্পতিবার উইজডমট্রি ইনভেস্টমেন্টসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জেসপার কোল সিএনবিসিকে বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, উভয় পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ আরো তিক্ত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা আসলে কয়েক বছরের অসন্তোষের ফলাফল এবং সর্বশেষ দক্ষিণ কোরিয়ার উচ্চ আদালতের রুলিং সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের ঔপনিবেশিক শাসনামালে মিত্সুবিশিতে জোরপূর্বক শ্রমের ক্ষতিপূরণ দাবি করে গত বছর একটি রায় দিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত। আদালতের রায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে জাপান। তাদের দাবি, বিষয়টি ১৯৬৫ সালেই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।

এদিকে সেমিকন্ডাক্টরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক পণ্য আমদানিতে নীতিমালা শিথিলের জন্য টোকিওর প্রতি অনুরোধ জানায় সিউল। কিন্তু সিউলের অনুরোধে সাড়া দেয়নি টোকিও। দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রোববার জানায়, তারা বিষয়টি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে উপস্থাপন করবে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের বরাতে জানা গেছে, তারা ২৩-২৪ জুলাই ডব্লিউটিওর পরবর্তী সাধারণ সভায় এ প্রসঙ্গটি উপস্থাপন করবে। সিউল ও টোকিওর মধ্যকার সাম্প্রতিক বাণিজ্য উত্তেজনার পেছনে ওয়াশিংটনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও সাম্প্রতিক সময় তাদের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা বিরাজ করছে। রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, ইস্ট এশিয়া পলিসিবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক ডেভিড স্টিলওয়েল বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্বার্থসংক্রান্ত সব বিষয়ে সম্পৃক্ত থাকবে ওয়াশিংটন। টোকিওর সঙ্গে সিউলের সাম্প্রতিক বিরোধ নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে কৌশলে তা এড়িয়ে যান স্টিলওয়েল। অবশ্য গত সপ্তাহে জাপানি সম্প্রচার মাধ্যম এনএইচকে টিভিকে তিনি বলেছিলেন, জাপান-দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার বিরোধে নাক গলাবে না যুক্তরাষ্ট্র।

কোরিয়া-জাপান বিরোধে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্ত হবে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। কোরিয়া ইকোনমিক ইনস্টিটিউট অব আমেরিকার জ্যেষ্ঠ পরিচালক ট্রয় স্ট্যাঙ্গারন বলেন, এর আগের মার্কিন প্রশাসনগুলো পর্দার পেছনে থেকে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করত। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন এবার কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। উইজডমট্রি ইনভেস্টমেন্টসের উপদেষ্টা কোল বলেন, ট্রাম্পের দুনিয়ায় আমেরিকা আগে (আমেরিকা ফার্স্ট), তারপর বাকি দুনিয়া।

সৌজন্যে- বণিক বার্তা