মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে বিফোরজি প্রোগ্রাম চালু করেছে। ১ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে এ প্রোগ্রাম। চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বিশেষ করে এ প্রোগ্রামের আওতায় স্বল্পমূল্যে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া ফ্লাইট টিকিট দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য ফ্লাইট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান জানিয়ে আসছেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম। গত ২৩ জুলাই কুয়ালালামপুর-ঢাকা ফ্লাইট পরিচালনাকারী এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলাদেশ হাইকমিশনে এ সম্পর্কিত একটি সভা হয়।
এ কর্মসূচির নিয়মানুযায়ী ইচ্ছুকদের নিজ দেশে ফিরতে আগেই ফ্লাইট টিকিট ক্রয় করতে হয় এবং পরে ইমিগ্রেশনে আবেদন করতে হয়। এ প্রোগ্রামের আওতায় কালোবাজারিদের দ্বারা যাতে সাধারণ কোনো কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং ফ্লাইট টিকিট যেন সহজে স্বল্পমূল্যে ক্রয় করতে পারে তা নিশ্চিত করতে বলেছেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার।
কর্মসূচি সফল করতে এয়ারলাইনসগুলো সহযোগিতা করার আশ্বাসও দিয়েছে। এ আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে উড়োজাহাজ কর্তৃপক্ষ বিশেষ ছাড় দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও ইউএস বাংলা। তবে সাধারণ কর্মীদের অভিযোগ, উড়োজাহাজগুলো দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে। এমন অভিযোগের কথা জানতে চাইলে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার ইমরুল কায়েস এ প্রতিবেদককে জানান, এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এখন তথ্যপ্রযুক্তির দিন। যে কেউ অনলাইনে বিমান ভাড়া তার মোবাইলের মাধ্যমে চেক করতে পারেন। এখানে দ্বিগুণ ভাড়া নেয়ার সুযোগ নেই।
সাধারণ ক্ষমার আওতায় অবৈধ কর্মীরা যাতে কম মূল্যে টিকিট কাটতে পারেন, সেজন্য বাংলাদেশ বিমান তিন ক্যাটাগরির ভাড়া নির্ধারণ করেছে। সেগুলো হচ্ছে, ১-ভাড়া ২৫০, ট্যাক্স ৭৪, লেভি ২০, মোট : ৩৪৪ রিঙ্গিত। এই ফ্লাইটে শুধু হাতে করে ৭ কেজি মাল নেয়া যাবে। ২- ভাড়া ৩৭৫, ট্যাক্স ৭৪, লেভি ২০, মোট : ৪৬৯ রিঙ্গিত। এক্ষেত্রে একজন যাত্রী ২৫ কেজি ব্যাগে এবং ৭ কেজি হাতে মাল নিতে পারবেন। ৩- ভাড়া ৪২৫, ট্যাক্স ২০ রিঙ্গিত, মোট : ৫১৯ রিঙ্গিত। এক্ষেত্রে একজন যাত্রী ৩৫ কেজি ও ৭ কেজি মাল নিতে পারবেন।
ইমরুল কায়েস জানান, এখানে যে লেভি ২০ রিঙ্গিত সেটা মালয়েশিয়া সরকার আগে নিত না। এখন তারা নতুন আইন করে টিকিটের সঙ্গে নিচ্ছে। সকল উড়োজাহাজ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কর্তন না করতে আবেদন করলে তারা নাকচ করে দেয়।
ইউএস-বাংলার অপারেশন ম্যানেজার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, হাইকমিশনে আলোচনার পর সাধারণ ক্ষমার আওতায় বাংলাদেশি কর্মীদের কমমূল্যে টিকিট দিতে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার পরিমাণ হচ্ছে ভাড়া, ট্যাক্স ও লেভিসহ মোট ৫শ থেকে সাড়ে ৫শ রিঙ্গিতের মধ্যে।
হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রত্যেক যাত্রীর মালামাল সময়মতো পৌঁছানোর বিষয়টিও আমরা নিশ্চিত করেছি। মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষিত কর্মসূচির কাজ প্রক্রিয়াকরণে কোনো তৃতীয়পক্ষ বা এজেন্ট নিযুক্ত করা হয়নি বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, কোনো মাধ্যম ছাড়াই আবেদনকারীকে সরাসরি নিকটস্থ ইমিগ্রেশন অফিসে হাজির হয়ে আবেদন করতে হবে। যদি কেউ তৃতীয় পক্ষ বা মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রদান করে তাহলে জেল-জরিমানা হতে পারে।