Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

malaysia-bangladeshiপ্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশি কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, ‘শোনা যাচ্ছে, অনেকেই চেষ্টা করছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার যেন চালু না হয়। হলেও যেন আগের মতো হয়। এই ধরনের অপচেষ্টা তো চলছেই। কিন্তু সময়ই বলে দেবে কী হবে। শ্রমবাজারটিতে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে লাভ হবে না। কোনো এক অদৃশ্য শক্তি দেশটিতে কর্মী প্রেরণ থামাতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, দু’দেশের সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে শ্রমবাজারটিতে এসব অপতৎপরতা বেশি দূর এগোতে পারেনি। বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আসায় দু’দেশের মন্ত্রণালয় সজাগ রয়েছে। সকল প্রকার সিন্ডিকেটের তৎপরতা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। মালয়েশিয়ায় গিয়ে যেন কোনো কর্মী সমস্যায় না পড়ে সে বিষয়েও কথাবার্তা চলছে।

chardike-ad

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে আগামী ৬ নভেম্বর পুত্রাযায়ায় দু’দেশের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারান ও বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশি কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে সম্প্রতি জানা গেছে।

এ ছাড়াও বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আরও চারজন অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে মালয়েশিয়ার ইচ্ছাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।

তবে ৬ নভেম্বরের আগে যেকোন দিন তাদের মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা রয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করছেন এবং কর্মীদের স্বার্থ রক্ষা করেই শ্রমবাজারটি চালুর বিষয়ে দুই দেশই আন্তরিক বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

মালয়েশিয়া সফরে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, যুগ্মসচিব ফজলুল করিম এবং উপ-সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসাইন।

একটি সূত্রে জানা গেছে, শ্রমবাজার চালুর ক্ষেত্রে এবার মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি বিষয় সামনে আসতে পারে। এর মধ্যে কর্মীদের কম অভিবাসন ব্যয়ে পাঠানো, কোম্পানি পরিবর্তন না করা, মেয়াদ শেষে দেশে ফিরে আসা, যোগ্য সকল রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানো, মেডিকেলসহ অন্য বিষয়গুলো মালয়েশিয়ার পদ্ধতিতে পরিচালনা করা।

প্রবাসী কল্যাণ এ বিষয়ে আগেই জানিয়েছেন, কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। তাদের কিছু প্রস্তাবনা বা চাহিদা থাকতে পারে। তারা কী চায়, সেটাই গুরুত্ব দেয়া হবে। এ ছাড়া দেশের স্বার্থ এবং কর্মীদের সুবিধা অগ্রাধিকার পাবে।

সরকার বাজারটি চালু করতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে চেষ্টা করলেও ব্যবসায়ীদের একটা অংশ নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যা শুরু হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। মালয়েশিয়ার দাতু ড. রাইস হোসাইনকে ঢাকায় আনা হয়। সে সময় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করানো হয়।

এ ছাড়াও গুলশানে একটি পাঁচতারকা হোটেলে কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথেও বৈঠক করেন দাতু ড. রইস। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় আনা হয় বাংলাদেশি দাতু মোহাম্মদ হানিফকে। তখন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদের সাথে বৈঠক করেন দাতু হানিফ।

সেই বৈঠকে ছিলেন বায়রায় সাবেক সভাপতি নুর আলী, বর্তমান সভাপতি বেনজীর আহমদ, মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান। দাতু হানিফ মেডিকেল সেক্টর বিষয়ে কথা বলতে এসেছিলেন বলে তখন জানিয়েছিলেন মন্ত্রী ইমরান আহমদ।

এরপর চলতি বছরের আগস্টে ঢাকায় আসেন, মালয়েশিয়ার কন্সট্রাকশন ডেভেলপমেন্ট বোর্ড-সিআইডিবির প্রতিনিধিরা। তারা আশুলিয়ায় সাউথ পয়েন্ট ওভারসিস, ইউনিক ইস্টার্নসহ ৬ থেকে ৭টি রিক্রুটিং এজেন্সির ট্রেনিং সেন্টার পরিদর্শন করেন। সাধারণ ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন মালয়েশিয়ার কনস্ট্রাকশন সেক্টর দখলে নিতে এই তৎপরতা চালানো হয়।

গেল বছরের ১ সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর অনলাইন পদ্ধতি এসপিপিএ। সে সময়ে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বি.এসসি ২৫ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ায় গিয়ে বৈঠক করেও, শ্রমবাজারটি চালু করতে পারেননি। এরপর ৩১ অক্টোবর ঢাকায় দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সেই বৈঠকে নতুন করে কর্মী নেয়ার কিছু পদ্ধতি ঠিক হয়। চলতি বছরের ১৪ মে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী (তখন প্রতিমন্ত্রী) ইমরান আহমদ মালয়েশিয়া সফরে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানশ্রি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ও মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলাসেগারানের সাথে বৈঠক করেন।

বৈঠকের অগ্রগতি হিসেবে ২৯ ও ৩০ মে মালয়েশিয়ায় দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের আরেকটি বৈঠক হয়। কিন্তু সেখান থেকেও শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে কোনো রূপরেখা পাওয়া যায়নি।