Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

লন্ডনে এক মাসে বাড়ির দাম কমেছে ৫.৯%

চলতি মাসে ব্রিটেনে নতুন বাড়ির দাম জুলাইয়ের তুলনায় গড়ে ২ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গেছে, যা সর্বোচ্চ দরপতন। ওদিকে রাজধানী লন্ডনে বাড়ির দাম কমেছে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। সম্পত্তি বাজারের বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান রাইটমুভের হিসাবে এ চিত্র উঠে আসে। খবর গার্ডিয়ান।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্রীষ্মে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ির দাম কিছুটা কম থাকে। তবে আগস্টে ব্রিটেনের সম্পত্তির বাজারে গড় মূল্যে রেকর্ড পতনের মূল কারণ লন্ডনে নতুন বাড়িগুলোর বড় মূল্যহ্রাস। একসঙ্গে অনেক নতুন বাড়ি বিক্রির তালিকায় চলে আসায় সেখানে তিন মাস ধরে বাড়ির দাম কমাচ্ছে আবাসন কোম্পানিগুলো।

chardike-ad

ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে বিক্রেতা কোম্পানিগুলো আগের মাসের চেয়ে আগস্টে গড়ে প্রতিটি বাড়ির দাম ৭ হাজার ৭৫০ পাউন্ড কমিয়ে দেয়, যা ২০০১ সালে রাইটমুভের এ পরিসংখ্যান চালুর পর সর্বোচ্চ দরপতন।

লন্ডনে আগস্টে আগের মাসের চেয়ে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ কম দর হাঁকছে নতুন বাড়িগুলোর বিভিন্ন বিক্রেতা কোম্পানি, যদিও তা ২০১৩ সালের আগস্টের তুলনায় গড়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। চলতি মাসে লন্ডনে প্রতিটি বাড়ির দাম গড়ে ৭২ হাজার পাউন্ড কমিয়ে ৭ লাখ ৮৬ হাজারে নামিয়ে এনেছে কোম্পানিগুলো, এক বছর আগে যা ছিল ৭ লাখ ২ হাজার পাউন্ড।

জুন থেকে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের নতুন বাড়ির দাম গড়ে ১০ শতাংশ কমেছে, যা সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যবৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৩ শতাংশে নামিয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাইটমুভের প্রতিবেদন অনুসারে, উত্তর ইংল্যান্ড বাদে ব্রিটেনের প্রায় অঞ্চলেই বাড়ির দাম কমেছে। উত্তর ইংল্যান্ডে চলতি মাসে জুলাইয়ের তুলনায় দাম বেড়েছে দশমিক ৫ শতাংশ। গত এক বছরে দেশটির প্রায় সব স্থানেই বাড়ির দাম বাড়লেও আগের বছরের আগস্টের সমানই আছে উত্তর ইংল্যান্ডের নতুন বাড়িগুলোর দাম।

জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে লন্ডনের বাইরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরপতন ঘটেছে অ্যাংলিয়ায়। সেখানকার বিক্রেতারা আগস্টে প্রতিটি নতুন বাড়ির জন্য গড়ে ২ লাখ ৫১ হাজার ২১৪ পাউন্ড করে দর হাঁকছে, যা আগের মাসের তুলনায় ৪ শতাংশ কম।

다운로드 (27)এ পরিস্থিতির কারণ হিসেবে আবাসন বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার বেগবান করতে গৃহীত নির্মাণযজ্ঞের সমান্তরালে চাহিদা বাড়ানো যায়নি। এছাড়া লন্ডনে বাড়ির দাম নিয়ে যে প্রত্যাশা করা হচ্ছিল, সাম্প্রতিক মাসগুলোয় তা-ও পূরণ হয়নি। সম্পত্তির বাজারের সম্ভাব্য অতিমূল্যায়ন নিয়ে ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতাও স্পেকুলেটিভ বিনিয়োগে কিছুটা লাগাম টেনেছে।

রাইটমুভের পরিচালক ও আবাসন বাজার বিশ্লেষক মাইলস শিপসাইড লন্ডনের দরপতনকে ‘আসলেই বেশি’ বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ছুটির দিনগুলোয় স্বাভাবিকভাবেই রাজধানীর সম্পত্তির বাজার কিছুটা শীতল থাকে, যা দাম কমিয়ে আনে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেক নতুন বাড়ির দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। লন্ডনের বাইরে অন্যান্য অঞ্চলে কিছু নতুন বাড়ির দাম এরও দ্বিগুণ পর্যন্ত বাড়ার উদাহরণ আছে। এর অর্থই দাঁড়ায় অনেক বাড়ির দাম অস্বাভাবিক হারে কমেছে।

শিপসাইডের মতে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস যত বাড়ছে, ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনাও তত নিকটে আসছে। সুদের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আবাসিক সম্পত্তির সম্ভাব্য ক্রেতাদের একটি অংশ এখন বন্ধকি ঋণ নিতে সাহস করছেন না। এমন পরিস্থিতিতে স্পেকুলেটিভ বিনিয়োগকারীরাও কিছুটা নিরুত্সাহিত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ক্রয়ের তুলনায় বিক্রয়চাপ বেশি। আগামী মাসেও বাড়ির দাম কমার আশঙ্কা করছেন এ বিশ্লেষক।

ব্রিটিশ ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব এস্টেট এজেন্টসের সভাপতি সিমন জেরার্ড বলছেন, সুদের হার বৃদ্ধির আশঙ্কাই আবাসন বাজারের এ দরপতনের মূল কারণ।