Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ইতালিতে একদিনে ১৩৩ জনের মৃত্যু, জরুরি অবস্থা জারি

italy-coronaপ্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইতালি। দেশটিতে একদিনে এক লাফে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৬ জনে। এদিকে দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩৭৫ জনে। এ অবস্থায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইতালি সরকার।

লোম্বারদিয়াসহ ১৪টি প্রদেশে ৮ মার্চ থেকে আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত এ অবস্থা জারি থাকবে। ১৪ প্রদেশে প্রায় দেড় কোটি লোক বসবাস করে। এ অবস্থার পর কেউ ওই এলাকা থেকে প্রবেশ এবং প্রস্থান করতে পারবে না বলে দেশটির সরকার জানিয়েছে।

chardike-ad

রেড জোন হিসেবে রয়েছে- মোডেনা, পারমা, পিয়াসেনজা, রেজিও এমিলিয়া, রিমিনি, পেসারো এবং উরবিনো, ভেনিস, পদুয়া, ট্র্যাভিসো, আস্তি, আলেসান্দ্রিয়া, নোভারা, ভারবানো, কুসিও অসসোলা এবং ভেরসেল্লি। এসব এলাকা থেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।

ইতালির সরকার বলছে, এই রেড জোনের আইন কেউ অমান্য করলে ২০৬ ইউরো জরিমানা অথবা তিন মাসের জেল দেয়া হবে। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, সিনেমা আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ নিশ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। এখন পর্যন্ত এক লাখ ১০ হাজার ৫৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ৮২৮ জন। অপরদিকে করোনায় আক্রান্ত ৬২ হাজার ২৭৬ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।

বিশ্বের ১০৯টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৩৫ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১১৯ জনের। চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮২ এবং মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের।

চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। দেশটিতে একদিনেই ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৬ জনে। এদিকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩৭৫ জনে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইতালি সরকার। অপরদিকে ইরানে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৬৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১৯৪ জন।

জাপানে নোঙর করা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসের ৬৯৬ যাত্রী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। জার্মানিতে এই ভাইরাসে ১ হাজার ৪০ জন আক্রান্ত হয়েছে। ফ্রান্সে ১ হাজার ২০৯ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১৯ জন। জাপানে আক্রান্ত হয়েছে ৫০২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের।

স্পেনে আক্রান্ত ৬৭৪ এবং মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের, যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত ৫৪০, মৃত্যু ২২। সুইজারল্যান্ডে আক্রান্ত ৩৩২ এবং মারা গেছে ২ জন, যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ২৭৮ মৃত্যু ৩। ইরাকে আক্রান্ত ৬০, মৃত্যু ৬। ভারতে ৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। তবে দেশটিতে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগীর প্রাণহানি ঘটেনি।

এছাড়া সুইডেন আক্রান্ত ২০৩, সিঙ্গাপুরে ১৫০, নেদারল্যান্ডসে আক্রান্ত ২৬৫ এবং মৃত্যু ৩, নরওয়েতে আক্রান্ত ১৭৬, বেলজিয়ামে ২০০, হংকংয়ে আক্রান্ত ১১৫ এবং মৃত্যু ৩, মালয়েশিয়ায় ৯৯, অস্ট্রিয়ায় ১০৪, অস্ট্রেলিয়ায় আক্রান্ত ৮০, মৃত্যু ৩, বাহরাইনে ৮৫, কুয়েতে ৬১, কানাডায় ৬৪, থাইল্যান্ডে ৫০ এবং মৃত্যু ১, তাইওয়ানে আক্রান্ত ৪৫ এবং মৃত্যু ১, গ্রিসে ৭৩, আমিরাতে ৪৫, আইসল্যান্ডে ৫৮, সান মারিনোতে ৩৬ জন আক্রান্ত এবং মৃত্যু ১, ডেনমার্কে আক্রান্ত ৩৫, লেবাননে ৩২, ইসরাইলে ৩৯, চেক রিপাবলিকে ৩২, আয়ারল্যান্ডে ২১, আলজেরিয়াতে ২০ এবং ভিয়েতনামে ৩০ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

অপরদিকে ওমানে ১৬, ফিলিস্তিনে ১৯, মিসরে ১৫, ফিনল্যান্ডে ২৫, ব্রাজিলে ২৫, ইকুয়েডরে ১৪, পর্তুগালে ৩০, রাশিয়ায় ১৭, ক্রোয়েশিয়ায় ১২, কাতারে ১৫, ম্যাকাউতে ১০, এস্তোনিয়ায় ১০, জর্জিয়ায় ১৩, রোমানিয়ায় ১৫, আর্জেন্টিনায় ১২, স্লোভেনিয়ায় ১৬, আজারবাইজানে ৯, বেলারুশে ৬, মেক্সিকোতে ৭, পাকিস্তানে ৭, ফিলিপাইনে আক্রান্ত ১০ এবং মৃত্যু ১, সৌদি আরবে ১৫, চিলিতে ১০, পোল্যান্ডে ১১, স্লোভাকিয়ায় ৫, পেরু ৭, ইন্দোনেশিয়ায় ৬, নিউজিল্যান্ডে ৫, সেনেগালে ৪ ও হাঙ্গেরিতে ৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

এছাড়া লুক্সেমবার্গে ৫, উত্তর মেসিডোনিয়ায় ৩, বসনিয়ায় ৩, ডোমিনিক প্রজাতন্ত্রে ৫, মরক্কোতে ২, আফগানিস্তান ৪, কম্বোডিয়া ২, বুলগেরিয়া ৪, ক্যামেরুন ২, মালদ্বীপ ৪, দক্ষিণ আফ্রিকা ৩, লাটভিয়ায় ৩, বাংলাদেশে ৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

অপরদিকে আন্দোরা, আর্মেনিয়া, জর্ডান, লিথুনিয়া, মোনাকো, নেপাল, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কা, তিউনিসিয়া, ইউক্রেন, ভুটান, কোস্টারিকা, ভ্যাটিকান সিটি, গিব্রালটার, সার্বিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং টোগোতে একজন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দাবি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনাভাইরাসের প্রকোপের বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বসহকারে নিচ্ছে না। এসব দেশের স্বাস্থ্যকর্মীরাই বলছেন, তাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়। এদিকে করোনাভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতির দেশগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে।