Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ফেসবুকে সমালোচনার পর পাঠ্যপুস্তকের ভুল সংশোধনে কমিটি গঠন

book-1

নতুন পাঠ্যবইয়ের ভুল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে চলছে তীব্র সমালোচনা। এ পরিপ্রেক্ষিতে এগুলো পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। একই সঙ্গে সমালোচনার মুখোমুখি হওয়া ভুলগুলো সংশোধনের পাশাপাশি নতুন শিক্ষাবর্ষের সব বই পরিমার্জনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের। এনসিটিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

chardike-ad

চলতি বছরের প্রথম দিন ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ২০১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার বই ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে সরকার। এর পর পরই বিভিন্ন মহল থেকে পাঠ্যপুস্তকে বিদ্যমান ভুল ও অসামঞ্জস্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিশেষত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ওঠে সমালোচনার ঝড়। এর মধ্যে রয়েছে— কবিতার বিকৃতি, বানান বিভ্রাট, শিশুদের সামনে উপস্থাপিত উদাহরণের যথার্থতা নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন। এ পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এনসিটিবি থেকে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ আমলে নিয়ে তা পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এনসিটিবি সদস্য (অর্থ) অধ্যাপক কাজী আবুল কালামকে আহ্বায়ক করে গঠিত তিন সদস্যের এ কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে এ-বিষয়ক প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানান, পাঠ্যবইয়ের সব ভুল-ত্রুটি ঠিক করে সংশোধনী দেয়া হবে। গঠিত কমিটির প্রতিবেদন পেতে আরো সময় লাগতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, এত কাজের মধ্যে কিছু ভুল হতে পারে। সবার সহযোগিতায় তা সংশোধন করা হবে। ভুলগুলো বিভিন্ন পর্যায়ে হয়। কোথায় কীভাবে ভুল হয়েছে, তা সবগুলো বই পর্যালোচনা করে দেখা হবে। কমিটি বলেছে, আরেকটু সময় লাগবে।

তিনি আরো বলেন, প্রতি বছরই নতুন বই প্রকাশের পর তা পরিমার্জন করা হয়। ভুল কোন পর্যায় থেকে এসেছে, তা বের করা হবে। যেটা হয়েছে, একটা সংশোধনীতে যেতে হবে, আমরা সংশোধনী দেব।

নতুন বই বিতরণের পরদিন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের বইগুলো দেয়ার কথা জানিয়ে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, তারা বইগুলো দেখছেন। এটা ধারাবাহিক পরিমার্জন প্রক্রিয়া। আমরা বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলব। ভুলগুলোর ধরন নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, ২০১২ সালে তৈরি নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী ২০১৩ সালের প্রথম দিন নতুন বই হাতে পেয়েছিল শিক্ষার্থীরা। সে সময়ও ভুল-ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছিল। এখনো ওই কারিকুলামই অনুসরণ করা হচ্ছে। তবে কোনো কোনো গল্প পরিবর্তন, ভুল থাকলে সেগুলো পরিবর্তন অর্থাত্ পরিমার্জন করা হয়েছে। যেসব কর্মকর্তার অবহেলায় পাঠ্যপুস্তকে ভুল হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলেছেন মন্ত্রী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশেষত প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যপুস্তকের ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হওয়া উচিত। শিশুদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মনোভাব গড়ে তুলতে পারে, এমন কিছু তাদের পাঠ্যপুস্তকে দেয়া ঠিক নয়। এনসিটিবির দুটি অংশ থাকা উচিত। একটি অংশ একাডেমিক কার্যক্রম এবং আরেকটি অংশ প্রিন্টিং, টেন্ডার, কেনাকাটার দায়িত্বে থাকবে। বই ছাপানোর কাজে বেশি সময় দিতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তাদের মূল দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই বিতরণের পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা শুরু হয়। ফেসবুকে বানান ভুলের খতিয়ান তুলে ধরে অনেকে প্রশ্ন রেখেছেন— শিশুদের পাঠ্যবইয়ে এসব কী শেখানো হচ্ছে। প্রথম শ্রেণীর বাংলা বইয়ে বর্ণ পরিচয়ে লেখা হয়েছে, ‘ও’-তে ওড়না চাই; যা নিয়ে ফেসবুকে চলছে তুমুল সমালোচনা। তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা বইয়ে কুসুমকুমারী দাশ রচিত ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতাটি বিকৃত করা হয়েছে। এছাড়া তৃতীয় শ্রেণীর একটি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির নিচে ইংরেজিতে একটি বাক্য লেখা হয়েছে ভুল বানানে। ওই বাক্যে আঘাত করা বোঝাতে গিয়ে হার্ট (hurt) বানান লেখা হয়েছে  HEART।