সংযুক্ত আরব আমিরাতে দীর্ঘ পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য নতুন ভিসা বন্ধ রয়েছে। হচ্ছে না অভ্যন্তরীণ কফিল বা স্পন্সর পরিবর্তনও।
ফলে দেশটিতে অবস্থানরত আট লক্ষাধিক প্রবাসীর অনেকেই পড়েছেন নানা বিপাকে। বিশেষ করে প্রবাসী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বিনিযোগকারীরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে অন্তত অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের ব্যবস্থাটা করে দেবে।
আমিরাতে হাজার হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র বিনিযোগকারী রয়েছেন। এর মধ্যে আবুধাবির উপশহর আল আইন গ্রিন সিটিতে রয়েছেন প্রায় ১০ হাজার। শুধুমাত্র আল আইনের সানাইয়ায় রয়েছেন পাঁচ হাজারের অধিক। দীর্ঘদিন ধরে নতুন ভিসা বন্ধ থাকায় প্রবাসীদের সংখ্যা যেমন দিন দিন কমছে, তেমনি কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহও। আর এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে জীবন বাজি রেখে ভিনদেশি শ্রমিক দিয়ে কাজ চালিয়ে যেতে চেষ্টা করছেন। ফলে দেশ হারাচ্ছে মূল্যবান রেমিট্যান্স।
জানা গেছে, প্রবাসী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকেই চালাচ্ছেন ছোটখাট স্টিলের দোকান, ওয়ার্কশপ, হোটেল বা চায়ের দোকান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, অ্যালুমিনিয়াম, গ্রোসারি, ওয়েল্ডিং, রিপেয়ারিং, অটো ইলেক্ট্রিক, টেইলারিং শপ, মোবাইল শপ, গ্যারেজ, সেলুনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভর করতে হয় দেশি শ্রমিকদের ওপর। ভাষাগত পার্থক্যের কারণে তাদেরকে পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে।
এসব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে যেমন প্রচুর কাজ রয়েছে, তেমনি স্বল্প পুঁজিতে লাভও হয় প্রচুর। কিন্তু দেশি শ্রমিকদের অভাবে ওর্ডারের কাজগুলো ঠিকমতো বুঝিয়ে দিতে বা সম্পন্ন করা যায় না বলে স্থানীয় বিভিন্ন কম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রায়ই মনোমালিন্য হয়। ফলে দেশের সুনামের সাথে সাথে অনেকে কাজও হারাচ্ছেন। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে অনেকে লোকসানও দিয়ে যাচ্ছেনন।
অভিজ্ঞ এসব ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের প্রত্যাশা সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমিরাতে বন্ধ ভিসা চালু করতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে অথবা দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের ব্যবস্থা করে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। কালের কণ্ঠ