শনিবার । ডিসেম্বর ২০, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক জাতীয় ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬:৫৫ পূর্বাহ্ন
শেয়ার

ওসমান হাদির মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোক ও প্রতিবাদ


Demo-fire

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, নেত্রকোনা, ঝালকাঠিসহ বিভিন্ন জেলায় শোক, ক্ষোভ ও প্রতিবাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। গতকাল রাত ২টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচি চলছিল।

ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় একাধিক শোক মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে টিএসসি ও হলপাড়া এলাকা থেকে বের হওয়া শোক মিছিল রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে জড়ো হয়। এ সময় ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম ও জিএস এস এম ফরহাদসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ঢাকা আলিয়া ও কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও এতে অংশ নেন। অনেক শিক্ষার্থী আবেগে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

জাতীয় ছাত্রশক্তির উদ্যোগে টিএসসি থেকে শাহবাগ পর্যন্ত আরেকটি শোক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের, জাতীয় ছাত্রশক্তির সভাপতি জাহিদ আহসান, সাধারণ সম্পাদক আবু বাকের মজুমদারসহ সংগঠনের বিভিন্ন নেতা অংশ নেন।

রাজু ভাস্কর্যের সমাবেশে বক্তব্য দেন জুলাই ঐক্যের সংগঠক ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের। তিনি বলেন, হাদি একাধিকবার নিরাপত্তা আশঙ্কা প্রকাশ করলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দায়বদ্ধতার আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। এবি জুবায়ের আরও বলেন, অতীতে অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া এক ব্যক্তির চলাফেরা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা তদন্তের প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

রাত পৌনে ১২টার দিকে শাহবাগের মিছিলে যুক্ত হন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এর আগে সাড়ে ১১টায় সেখানে উপস্থিত হন সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। শাহবাগে মাইকে বক্তব্য দিয়ে নাহিদ ইসলাম বিভিন্ন স্লোগান তোলেন, যা হাদি হত্যার প্রতিবাদ এবং ভারতীয় প্রভাব, আওয়ামী লীগবিরোধী নানা দাবি নিয়ে ছিল।

এদিকে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু হওয়া মিছিলে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্রশক্তি, বাম জোট ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরাও এতে যোগ দেন। উত্তরায় শহীদ মুগ্ধ মঞ্চে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন জুলাইযোদ্ধারা।

চট্টগ্রামে রাত সাড়ে ১১টার দিকে একদল তরুণ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। হাদি হত্যার প্রতিবাদে তারা আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী স্লোগান দেন। পরে পুলিশ তাদের সরে যেতে বাধ্য করে।

শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু নিয়ে দেশজুড়ে ক্ষোভ, শোক ও প্রতিবাদের এ ঢেউ অব্যাহত রয়েছে।