Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

আন্দোলন করে সরকার পতনের হুশিয়ারি ২০দলের

ভিন্নমত দমনে সরকার সম্প্রচার নীতিমালাসহ বিভিন্ন আইন করছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল। অনুমোদিত সম্প্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপি জোটের নেতারা বলছেন, “আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগ দিয়ে ভিন্নমতের উপর অবৈধ সরকার অত্যাচার চালাচ্ছে। এই সরকারকে বিদায় করা সময়ের দাবি। সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না। আন্দোলনের মাধ্যমেই তাদের সরাতে হবে।”

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস।

chardike-ad

image_95002_0এদিকে মঞ্চের ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকবেন লেখা থাকলেও তিনি যোগ দেননি। যদিও সভাপতির বক্তব্যে মির্জা আব্বাস বলেন, “শারীরিক অসুস্থতার কারণে সমাবেশে উপস্থিত হতে পারেননি খালেদা জিয়া।”এ জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই সমাবেশ ছিল বিএনপি জোটের দ্বিতীয় কর্মসূচি। এরআগে গত শনিবার রাজধানীসহ সারাদেশে কালো পতাকা মিছিল করা হয়। যদিও নির্বাচনে পর ২০ জানুয়ারি তৎকালিন ১৮ দলের সমাবেশ ডাকলেও পরে তা বিএনপির একক সমাবেশে রূপ নিয়েছিল।

সকাল থেকে রোদের মধ্যেই নির্ধারিত সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়। রাজধানীর বিভিন্ন  থানা ও ওয়ার্ড থেকে বিএনপি ও শরিক দলের নেতাকর্মীরা সম্প্রচার নীতিমালা বিরোধী স্লোগান নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হন।  বিকেল চারটার পর বৃষ্টি হলে নেতাকর্মীরা এদিক সেদিক ছোটাছুটি শুরু করে। কেউ কেউ উদ্যানের গাছের নীচে আশ্রয় নেন। তবে অনেককে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে থেকেই নেতাদের বক্তব্য শুনতে দেখা যায়।

সমাবেশের নিরাপত্তার জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন  ছিল। সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “শুধু সম্প্রচার নীতিমালা নয়, দেশের সব ক্ষেত্রে সরকার অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। সরকারের এসব কাজের বিরোধিতা করায় পুলিশ জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে। ”

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে প্রথম আঘাত হানে মিডিয়ার উপর। কারণ তাদের বিপক্ষে যেন কেউ কথা বলতে না পারে। অতীতে তারা অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে। সাংবাদিক ও সম্পাদকদের হয়রানি ও নির্যাতন করেছে।”

সম্প্রচার নীতিমালার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু কাজে বিশ্বাস করে না। তাদের কর্মকাণ্ডের কোনো সমালোচনা যেন না করা যায়, সে জন্য সম্প্রচার নীতিমালা করা হয়েছে।”

বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে নিয়ে যাওয়ার কঠোর সমালোচনা করেন ফখরুল। তিনি বলেন, “এমন সংসদ যেখানে কোনো জনপ্রতিনিধি নেই, ৫ শতাংশ মানুষও ভোট দেয়নি, এই সংসদে অভিশংসনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।”

তিনি বলেন, “ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মুখ থেকে আগে গণতন্ত্রের ফেনা বের হলেও এখন তাদের আসল চেহারা উন্মোচিত হতে শুরু করেছে। তাদের আসল চেহারা, তাদের প্রকৃত মুখোশ বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তাদের নেতারা বলতে শুরু করেছেন, গণতন্ত্র থাকলে নাকি দেশের উন্নয়ন হয় না।”

ফখরুল বলেন, “এ লড়াই ২০ দলের ক্ষমতার লড়াই নয়। খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করার লড়াই নয়। সাধারণ জনগণের মুক্তির লড়াই।”

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব:) অলি আহমেদ। তিনি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও রাজনৈতিক নেতাদের মুক্ত করে আনতে সবাইকে আন্দোলনের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ সরকারের উদ্দেশে বলেন, “বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার বন্ধে সম্প্রচার নীতিমালা করা হচ্ছে। জানতে চাই- সাগর-রুনি হত্যা, শেয়ার বাজার কেলেংকারী, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন যা আপনাদের দলের নেতারা করেছে এগুলো কি বিভ্রান্তিকর তথ্য? কোনোটিই বিভ্রান্তিকর নয়।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে আর ৭২ সালের সংবিধান হবে না। আমরা দেশকে ৪০ বছর পিছিয়ে যেতে দেব না। সাত কোটি মানুষ তখন সহ্য করেনি, এখন ১৬ কোটি মানুষ সহ্য করবে না।” খবর নতুনবার্তা।