
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ও দমন-পীড়নের নতুন ঢেউয়ে গত ১৮ মাসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে আরও প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা। শুক্রবার (১১ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের আগস্টে ভয়াবহ দমন-পীড়নের পর যেভাবে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল, এবারের অনুপ্রবেশ সেই ঘটনার পর সর্বোচ্চ। নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
ইউএনএইচসিআর জানায়, ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ইতিমধ্যে ১ লাখ ২১ হাজার নতুন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে অনেক রোহিঙ্গা এখনো শনাক্তের বাইরে থেকে গেছেন, যদিও তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছেন।
মাত্র ২৪ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে গাদাগাদি করে বসবাস করা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার জন্য কক্সবাজার এখন বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী আবাস। সেখানে নতুন করে বিপুলসংখ্যক মানুষ আসায় চরম চাপ পড়েছে মানবিক সহায়তা ব্যবস্থার ওপর।
মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চরম সংকটে
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, খাদ্য, চিকিৎসা, আশ্রয় ও শিক্ষাসহ নানা ধরনের সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন নতুন আগত রোহিঙ্গারা। কিন্তু দাতাদের অনুদান কমে যাওয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সেবা কার্যক্রম ইতোমধ্যে ব্যাহত হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য সহায়তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া, দুই লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে।
এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা, নিরাপত্তাহীনতা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তা। অনেকেই আবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ইউএনএইচসিআর-এর আহ্বান, রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে না আসা পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা যেন বন্ধ না করা হয়। সংস্থাটি বলছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সহযোগিতা এখন জরুরি।

































