মত্স্যর পাশাপাশি থাইল্যান্ডের বিভিন্ন শিল্প খাতে শ্রমিক ঘাটতি বাড়ছে। ঘাটতি পূরণে শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে চায় দেশটির সরকার। বেসরকারি জনশক্তি রফতানিকারকদের মাধ্যমে শ্রমিক নেবে দেশটি। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, নতুন শ্রমবাজার তৈরির লক্ষ্য হিসেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বেসরকারিভাবে জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) প্রতিনিধিরা ৪ সেপ্টেম্বর তিনদিনের সফরে থাইল্যান্ড যান। বায়রার সিনিয়র সহসভাপতি আলী হায়দার চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন বায়রার মহাসচিব মনসুর আহমেদ কালাম এবং থাইল্যান্ডে বায়রার প্রতিনিধি ও স্থানীয় শিল্পপতি শাহজাদা মোহাম্মদ আলী খান। সফরকালে প্রতিনিধি দল থাইল্যান্ডের শ্রম সচিব জিরাসুক সুগানধজ্যোতি এবং দেশটির শ্রমিক নিয়োগকারী ব্যুরোর পরিচালক কমল সাওয়াচুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় তারা বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার আগ্রহের কথা জানান।
এ প্রসঙ্গে আলী হায়দার চৌধুরী বণিক বার্তাকে জানান, বাংলাদেশ থেকে নির্মাণ ও মত্স্য খাতে কর্মী নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে থাইল্যান্ড। শ্রমিকদের বেতন কাঠামোসহ নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিশ্চিত করেই দেশটিতে শ্রমিক পাঠানো শুরু হবে। তিনি বলেন, বেশ কয়েক মাস ধরে থাইল্যান্ডে কর্মরত বিদেশী শ্রমিকের সংখ্যা নিরুপণ ও নিবন্ধনের কাজ চলছে। আগামী মাসে এ কাজ শেষ হবে। এর পরই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি শুরু করবে দেশটি।
জানা গেছে, আগামী চার বছরের থাইল্যান্ডে বিভিন্ন খাতে কত সংখ্যক বিদেশী শ্রমিক প্রয়োজন হবে, তার তালিকা তৈরি হচ্ছে। আগামী মাসের মধ্যে এ-সংক্রান্ত সার্ভে রিপোর্ট হাতে পাওয়া যাবে। এর পরই প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার, কম্বোডিয়া ও লাওসের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি করবে থাইল্যান্ড।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৫০ হাজার জেলে আমদানির প্রস্তাব দেয় থাইল্যান্ড সরকার। তবে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ের পাশাপাশি প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো ন্যায়সঙ্গত না হওয়ায় ওই সময় থাই সরকারের প্রস্তাবকে ইতিবাচক মনে করেনি বাংলাদেশ। থাইল্যান্ড সরকারের প্রস্তাব ছিল, বাংলাদেশী জেলেদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার কাজ করতে হবে। এর মধ্যে অন্তত ১০ হাজার জেলেকে থাইল্যান্ড সমুদ্রসীমার বাইরে অবস্থান করা বিভিন্ন মাছ ধরা ট্রলারে কাজ করতে হবে। প্রাথমিক প্রস্তাব অনুযায়ী, সরাসরি উভয় দেশের সরকারি মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে আগ্রহী ছিল থাইল্যান্ড। তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় শ্রমিক আমদানি সম্ভব না হওয়ায় এবার বেসরকারি জনশক্তি রফতানিকারকদের মাধ্যমে শ্রমিক নেয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে দেশটি।