Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ঘুরে আসুন এভারল্যান্ড

everland

খিওংগিদোর ইয়োংইনে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় থিম পার্কটি ঘুরে এসে এভাবেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিলেন দুই বিদেশী পর্যটক। কেবল গত বছরই পার্কটিতে দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ৬৬ লক্ষ। ওই বছর দর্শনার্থীর সংখ্যা বিচারে বিশ্বের অ্যামিউজমেন্ট পার্কগুলোর মধ্যে এভারল্যান্ডের অবস্থান ছিল ১৩তম। বাংলা টেলিগ্রাফের ‘কোরিয়া ভ্রমণ’ বিভাগের আজকের আয়োজনে চলুন পরিচিত হওয়া যাক কোরিয়ার প্রথম পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্রটির সাথে।

chardike-ad

এভারল্যান্ডের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ১৯৭৬ সালে। প্রাথমিকভাবে এর নাম ছিল ‘জেইয়ন নংউওন’, যার ভাবানুবাদ হতে পারে ‘প্রাকৃতিক খামার’। পরবর্তীতে পার্কটি পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া ‘স্যামসাং এভারল্যান্ড’ বিশ্বজনীন পরিচিতির লক্ষ্যে নাম বদলে রাখে এভারল্যান্ড।

এভারল্যান্ডের পুরো আয়োজনকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারেঃ

টি এক্সপ্রেস (T-Express)

t express everland
রোলার কোস্টারটিতে চড়ার আগে অবশ্যই নিজের সাহসের কথা ভেবে নিবেন

এভারল্যান্ডের রোলার কোস্টারটির নাম টি এক্সপ্রেস। গতি বিবেচনায় এটি এশিয়ায় সর্বাধিক গতিসম্পন্ন রোলার কোস্টার। উড্ডয়নের পথে টি এক্সপ্রেস ৭৭ ডিগ্রী পর্যন্ত বাঁক খায় যা গোটা বিশ্বেই সবচেয়ে বেশী। ১৮৭ ফুট উচ্চতায় ১০৪ কি.মি/ঘণ্টা গতি আপনার হৃৎপিণ্ড খাঁচাছাড়া করে দিলে সে দায় অবশ্য কর্তৃপক্ষ নেবে না!

জিগু মাউল (지구 마을)

world village
বিভিন্ন দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য দেখা যাবে পানিপথে

জিগু মলের তরজমা করলে দাঁড়ায় বিশ্ব গ্রাম। ক্যালিফোর্নিয়ার ডিজনি ল্যান্ডের আদলে গড়ে ওঠা এই ‘গ্রাম’-এ বিশ্বের কুড়িটিরও বেশী দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক নিদর্শন ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পানির উপরে বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যগুলোকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে অসাধারণ শৈল্পিক কারুকার্য দিয়ে। দর্শকরা অসাধারণ এক অনুভূতি পাবেন এই বিশ্বগ্রাম ভবনে।

এভারল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডটি মূলত পাঁচটি অঞ্চলে বিভক্তঃ

গ্লোবাল ফেয়ার

জিগু মলের সাথে সংযুক্ত গ্লোবাল ফেয়ার একটি বিশাল বাজার। বাহারি সাজের দোকান আর রেস্তোরায় পাবেন রকমারি খাবার ও হরেক রকম স্যুভনির।

জু-টোপিয়া

zoo everland
জো-টোপিয়া

নাম থেকেই ধারণা করতে পারছেন যে সোজা বাংলায় এটি একটি চিড়িয়াখানা। জু-টোপিয়া অধীবাসীভেদে আবার দু’ ভাগে বিভক্তঃ সাফারি ওয়ার্ল্ড ও লস্ট ভ্যালি। প্রথমটিতে খুব কাছ থেকে দেখা

মিলবে সাদা বাঘ, বাঘ, সিংহ, ভালুক প্রভৃতির। লস্ট ভ্যালি মূলত তৃণভোজী প্রাণীদের চারণভূমি। এখানে চাইলে আপনার ভালো লেগে যাওয়া জিরাফটিকে দু মুঠো খাইয়েও দিতে পারবেন!

ইউরোপিয়ান অ্যাডভেঞ্চার

এভারল্যান্ডের এই এলাকাটিতে দেখা মিলবে বেশক’টি ইউরোপিয়ান রেস্তোরার। এখানকার প্রতিটি স্থাপনাতেই ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পূর্বে উল্লেখিত টি এক্সপ্রেস এই রোমাঞ্চেরই অংশ। এখানকার আরও একটি প্রধান আকর্ষণ মিস্ট্রি ম্যানশনে ভূতদেরকে গুলি করা যাবে! ফোর সিজন গার্ডেনে রয়েছে বিভিন্ন মৌসুমি ফুলের সমারোহ।

ম্যাজিক ল্যান্ড

বাহারি স্থাপনা আর রাইডের বিশাল সংগ্রহশালা। ইশপের গল্পগুলোর উপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা হয়েছে একটি ইশপের গ্রাম।

অ্যামেরিকান অ্যাডভেঞ্চার

অ্যামেরিকার ইতিহাস-ঐতিহ্যনির্ভর এই অংশেও রয়েছে রকমারি রাইডের আয়োজন। ঈগলের দুর্গ আর রোডেওতে পাওয়া যাবে বুনো রোমাঞ্চ। পঞ্চাশের দশকের অ্যামেরিকা ও ওই সময়ের অ্যামেরিকান সংগীতের আয়োজন নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে রক ভিল। ডাবল রক স্পিনে বিভিন্ন ব্যান্ডের ‘লাইভ’ প্রদর্শনী উপভোগ করা যাবে। এই এলাকাতেই চড়া যাবে পার্কের আরও একটি রোলার কোস্টার এক্স-ট্রেনে।

যেভাবে যাবেনঃ

সাবওয়ে

সাবওয়ে’র এভারলাইনের (에버라인) জনদে এভারল্যান্ড স্টেশনের এক্সিট ৩ এ নেমে এভারল্যান্ডের শাটল বাস পাওয়া যাবে। ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত শাটল বাস পাওয়া যাবে।

বাস

১। সিনহিয়ন স্টেশন (Sinnonhyeon Station), খাংনাম স্টেশন (Gangnam Station), ইয়াংজায়ে স্টেশন (Yangjae Station) – বাস নং ৫০০২

২। পানগিয়ো (Pangyo), সেগকদোং (Segok-dong), সুসেও স্টেশন (Suseo Station), সোংপা স্টেশন (Songpa Station), জামসিল স্টেশন (Jamsil Station), খাংবিয়ন স্টেশন (Gangbyeon Station) – বাস নং ৫৭০০

৩। সাদাং স্টেশন (Sadang Station), নাম্বু টার্মিনাল (Nambu Terminal) – বাস নং ১৫০০-২

৪। খাংবিয়ন স্টেশন (Gangbyeon Station), খাংদং স্টেশন (Gangdong) – বাস নং ১১১৩

যাওয়ার আগে প্রস্তুতি এবং পরামর্শ

– এভারল্যান্ড ভালভাবে উপভোগ করতে হলে অবশ্যই দিনের শুরুতেই এভারল্যান্ডে পৌছাঁতে হবে। সকাল ১০ টায় এভারল্যান্ডে প্রবেশের প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়া ভালো।

– পরিবারের সবাইকে নিয়ে অথবা বন্ধুদের সাথে নিয়ে গ্রুপভিত্তিক গেলে আনন্দ দ্বিগুণ উপভোগ করা যায়।

– প্রবেশপত্র কেনার আগে ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখে নিতে পারেন বিশেষ কোন ছাড় আছে কিনা। বিভিন্ন উপলক্ষ্য সামনে রেখে এভারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ ২০~৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে থাকে। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে টিকেট কাটলেও বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়।

– দুপুরের খাবার, পানিসহ নিজেদের প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসপত্র নিতে ভুলবেন না।

– যাওয়ার আগে ওয়েবসাইট থেকে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।