সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। এ ঘটনার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
নিহত শিক্ষার্থীর সুমন দাস সিলেট শহরের ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত অবস্থায় সুমনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিনি মারা যান।
এদিকে সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি সিন্ডিকেট বৈঠক বসে। বৈঠকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। আজ বিকেল ৪টার মধ্যে ছাত্রদের এবং কাল শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকলেও এই সময়ে প্রথম বর্ষে ভর্তির কার্যক্রম চলবে।
সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলেও ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ তৎপর রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান হকের সমর্থক নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তারা শাহপরাণ, বঙ্গবন্ধু ও সৈয়দ মুজতবা আলী হলের দখল নিতে গেলে, এই হলগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা ছাত্রলীগের সহসভাপতি অঞ্জন রায় ও মিসবাহ রেদওয়ান গ্রুপের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় ক্যাম্পাসে কয়েকটি গুলি ও ৮-১০টি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর সভাপতি পক্ষের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে হলের দিকে চলে যান। ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন সহসভাপতি পক্ষের নেতা-কর্মীরা।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে আবারও উত্তেজনা দেখা দেয়। সভাপতি পক্ষ হলের দিকে এবং সহসভাপতির পক্ষ ক্যাম্পাসের দিক দিয়ে পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থান নেয়। দুই পক্ষের মধ্যে অবস্থান নেয় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। আমরা উভয় পক্ষকে শান্ত করা চেষ্টা করছি। তাদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী বলেন, আমরা আমাদের কর্মীদের হলে তুলে দিতে যাই। এ সময় প্রতিপক্ষ আমাদের ওপর হামলা করে। এরপর সংঘর্ষ বাধে।
তবে ঘটনার বিষয়ে সহসভাপতি অঞ্জন রায় বা তার পক্ষের কোনো নেতার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।