Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বায়তুল মোকাররমে কোকোর জানাজায় লাখো মুসল্লির ঢল

kokoবিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বাদ আসর বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ইমামতি করেন জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা প্রফেসর সালাহউদ্দীন। জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ লাখো মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
এর আগে কোকোকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি বিকেল চারটা ৩৫ মিনিটের দিকে বায়তুল মোকাররমে পৌঁছে।
গুলশান-বনানী হয়ে মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে ফার্মগেট হয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি বায়তুল মোকাররমের দিকে যায়। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েকশ নেতাকর্মীও সঙ্গে আসেন।
আরাফাত রহমানের জানাজায় বিএনপি, এর শরিক দল ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লাখো মানুষ অংশ নেন। জানাজায় অংশ নিতে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট থেকে মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম, মহানগর নাট্যমঞ্চ, গোলাপশাহ মাজার থেকে জিপিও মোড় পর্যন্ত সড়কে মানুষ অবস্থান নেয়।
অন্যদিকে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে পল্টন মোড়, দৈনিক বাংলা মোড় ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এলাকায়ও হাজারো মানুষ সমবেত হয়। তবে জানাজা নামাজে শুধুমাত্র মসজিদের মাইক ব্যবহার করায় মুসল্লিদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। মসজিদের বাইরে যারা অবস্থান নেন তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, তারা সঠিকভাবে কোনো কিছু শুনতে পারেননি।
এছাড়া শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ বায়তুল মোকাররম এলাকায় সমবেত হয়েছিলেন। জানাজা উপলক্ষ্যে পুলিশের নির্দেশে বায়তুল মোকারমের আশে-পাশে সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ রেখেছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল।
মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি গুলশান কার্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢোকানো হয় বেলা পৌনে ২টার দিকে। এরপর খয়েরি রঙের কফিনটি নিচ তলার একটি কক্ষে রাখা হয়। কফিন খোলার পর একটি গিলাফ দিয়ে কোকোর মরদেহ ঢেকে দেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর খালেদা জিয়ার দুই ভাবি দুই পাশ থেকে ধরে অশ্রুসিক্ত খালেদা জিয়াকে নিচে নামিয়ে আনেন।
এরআগে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ বহনকারী ফ্লাইট ঢাকায় হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। কোকোর স্ত্রী, দুই মেয়ে, মামা শামীম এস্কান্দারও একই ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন। পরে নেতা-কর্মীদের বেষ্টনির মধ্যে কোকোর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স গুলশানে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে কোকোর জানাজায় অংশ নিতে দুপুরের পর থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বায়তুল মোকাররমে আসতে থাকেন। আর জানাজাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সতর্ক অবস্থায় ছিলেন।
জানাজা শেষে কোকোর মরদেহ বনানী কবরস্থানে নেয়া হয়।সেখানেই তাকে সমাহিত করা হবে।
জানাজার আগে কোকোর ছোট মামা শামীম ইস্কান্দার উপস্থিত জনতার উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত কথা বলেন। তিনি কোকোর আত্মার মাগফেতার কামনা করে সবার কাছে দোয়া চান। একইসঙ্গে জীবদ্দশায় কোকোর আচারণে কেউ কেষ্ট পেলে সেজন্যও ক্ষমা চান তিনি।
জানাজা শেষে বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা সালাহ উদ্দিন সংক্ষিপ্ত মোনাজাত পরিচালনা করেন।
জানাজা শেষে লাশ দক্ষিণ প্লাজায় অস্থায়ী মঞ্চে রাখা হয়। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ আরাফাত রহমান কোকোর লাশ দেখার সুযোগ পান।
জানাজায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার চেয়ারম্যান বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, লে: জেনারেল (অব.)মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, রুহুল আলম চৌধুরী, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র এমএ মান্নানসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।
এছাড়া জোট নেতাদের মধ্যে কর্ণেল (অব.) অলি আহমেদ, সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহীম, জেবেল রহমান গাণি, ড. রেদওয়ান আহমেদ, শাহাদাত হোসেন সেলিম, গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সাইফুদ্দিন মনি, অ্যাড. আবদুল মোবিন, এম আমিনুর রহমান প্রমুখ কোকোর জানাজায় অংশ নেন।