Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

পশ্চিমা নারীদের যেভাবে কাছে টানে আইএস

isগেল মাসের কথা। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের আদালতে দুই নারীকে অভিযুক্ত করা হলো। অভিযোগ, তাঁরা ‘ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র’ ব্যবহারের ষড়যন্ত্র করছিলেন। দুই নারীই ইসলামিক স্টেট (আইএস) নামে কথিত রাষ্ট্রের ‘নাগরিক’। যদিও জীবনেও সে মুলুকে পা রাখেননি তাঁরা। না যাওয়ার কারণও আছে। তাঁরা মনে করেন, বয়স নেই। একজন আবার বিবাহিত।

বয়স এবং বৈবাহিক অবস্থা নিয়ে ওই দুই পশ্চিমা নারীর উদ্বেগে বিস্ময়ের কিছু নেই। অনলাইনে আজকাল আইএস যেসব আলোচনা করে, সেখানেও যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছানোর পরপরই বিয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়। তাদের মতে, বিয়ে একজন যোদ্ধার নিজস্ব সত্তার শক্ত পরিচয় এনে দেয়। এনে দেয় সংগঠনের সঙ্গে একাত্মতার অনুভূতি।

chardike-ad

লন্ডনের কিংস কলেজের প্রভাষক ক্যাথরিন ব্রাউন এ বিষয়ে আলোকপাতের চেষ্টা করেছেন। তিনি মনে করেন, পাশ্চাত্যের নারীদের দুটি বিকল্পের একটি গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়, যা কিনা যথার্থ নয়। হয় তারা অধিকার ও নারীবাদের স্বীকৃতি পেয়ে থাকে, না হয় ‘প্রথা’ ও ‘ধর্ম-বিশ্বাস’। দুটোই একসঙ্গে পাওয়ার দাবি করা বৃথা। কারণ, তাদের নিজস্ব সম্প্রদায়গুলোর পাশাপাশি দেশের মূল স্রোতোধারার জনগোষ্ঠীও সেটাকে অযৌক্তিক হিসেবে দেখে থাকে।

এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছে আইএস। তারা পাশ্চাত্যে নারীর মর্যাদা নিয়ে অনবরত প্রশ্ন তুলছে। সবচেয়ে বেশি আলোকপাত করা হচ্ছে, ঘরের কাজ ও বাইরে বেতনভুক্ত চাকরি নিয়ে মনে সৃষ্ট দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, ধর্ষণের সংস্কৃতি, পর্নোগ্রাফি, বর্ণবাদ ইত্যাদি বিষয়ের ওপরে।
ব্রাউনের মতে, আইএসের কাছে নারী ও পুরুষ সমান নয়। তারা পাশ্চাত্যের উদার নারীবাদী মতাদর্শকে মানে না। আইএসের ‘রাষ্ট্রে’ নারীদের খুব সামান্যই বাইরে বেরোনো, কাজ করা বা অন্যান্য প্রকাশ্য ভূমিকা পালনের সুযোগ আছে।

আইএসের ভেতরে বিবাহের মানে দুজন মানুষের মধ্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের চেয়ে অনেক বেশি কিছু। সেখানে ব্যক্তিগত কিছু চাওয়া-পাওয়ার সঙ্গে যুক্ত আছে সুন্দর জীবনের ধারণা; আছে এক ও অভিন্ন লক্ষ্য। এ লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা।

যেসব পশ্চিমা তরুণী সিরিয়া ও ইরাকে যাচ্ছেন, তাঁদের লক্ষ্য নতুন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জননীর ভূমিকা পালন করা। এটা ইউরোপে বসবাসরত তরুণ মুসলিমদের সম্পর্কে আজ যে নেতিবাচক সর্বজনীন ধারণা বিরাজমান, তার বিপরীত। কারণ, ইউরোপে প্রায়ই তাঁদের ‘হুমকিস্বরূপ’, ‘নিঃসঙ্গ’, ‘অনাহূত’ ইত্যাদি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। অনেকেই মনে করেন, ইউরোপে তাঁদের ভবিষ্যৎ বিশেষ সুবিধার নয়। তার বিপরীতে পাশ্চাত্যের একশ্রেণির নারীর কাছে আইএসের প্রচারণা দিচ্ছে সম্ভাবনার বারতা।

সূত্র: বিবিসি