Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় হতে পারে টিটিএস

Vaccine
ফাইল ছবি।

কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে এবার মুখ খুলেছে ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। তাঁদের ভ্যাকসিনে ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) অ্যাস্ট্রাজেনেকা সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।

ব্রিটিশ উচ্চ আদালতে জমা দেওয়া এক নথিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাঁদের তৈরি করোনার টিকার কারণে বিরল রোগ টিটিএসের লক্ষণ দেখা যেতে পারে।

chardike-ad

সম্প্রতি ব্রিটেনে এই ভ্যাকসিন গ্রহণের ফলে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার বহু অভিযোগ সামনে এসেছে। এমনকি অভিযোগ গড়িয়েছে মামলা পর্যন্ত। দেশটির বিভিন্ন কাউন্টির আদালতে  শরণাপন্ন হয়েছেন ভ্যাকসিন গ্রহণ করে অসুস্থতার শিকার বহু পরিবার। জেমি স্কট নামের এক ব্যক্তি সর্বপ্রথম এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং সেই জটিলতা সম্পর্কে আদালতে অভিযোগ দাখিল করেন।

এছাড়াও অভিযোগের তীর উঠেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। কারণ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ফর্মুলায় ভারতে ভ্যাকসিন তৈরি এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ করে প্রায় ১০০ কোটিরও বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা হয়। এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) অনেক নেটিজেন এই ভ্যাকসিন থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। এমনকি মোদীর গ্রেফতারেরও দাবি তুলেছেন অনেকেই। যা লোকসভা নির্বাচনের মুখে রীতিমতো চাপে ফেলেছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারকে।

মূলত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন  প্রতিবেশী দেশগুলোতে কোভিশিল্ড এবং ভ্যাক্সজেভেরিয়া নামে প্রক্রিয়াজাতকরণ করে রপ্তানি করেছিলো দেশটির ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট। ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবর প্রকাশের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

টিটিএসের পূর্ণ রূপ হলো ‘থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’। যার ফলে মানুষের রক্তে প্লাটিলেট কমে যায় এবং দেহের ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। আর এই রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনাটি ঘটে দেহের এমন সব জায়গায়, যেগুলো বেশ জটিল। এর মধ্যে রয়েছে মানুষের মস্তিষ্ক। প্লাটিলেট কমে গেলে রক্তের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে।

দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ভ্যাক্সজেভেরিয়া, কোভিশিল্ড ও জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানির করোনার টিকা যারা গ্রহণ করেছেন, তাঁদের অনেকের শরীরে এসব লক্ষণ দেখা গেছে। টিটিএসের লক্ষণ দেখা যাওয়ার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, ভ্যাকসিন সরাসরি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। এতে শরীরের ভেতরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা রক্ত জমাট বাঁধায় কাজ করা প্রোটিনকে আক্রান্ত করে কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়।

টিটিএসের লক্ষণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সিডিসি জানিয়েছে, বিরল এই রোগের ফলে মানুষের অন্ত্র ও মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। এমনকি পা এবং ফুসফুসও এ ঝুঁকির বাইরে নয়। এ রোগে কেউ আক্রান্ত হলে রক্তে প্লাটিলেট কমে প্রতি মাইক্রোলিটারে দেড় লাখে নেমে আসতে পারে।

এছাড়াও টিটিএসের সাধারণ কিছু লক্ষণও রয়েছে। এগুলো হলো- মাথাব্যথা, পেটব্যথা, পা ফুলে যাওয়া, শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া এবং চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটা। এসব লক্ষণ কারো মধ্যে থাকলে তাঁকে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সিডিসি।