Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বৈদেশিক রিজার্ভ ভেঙ্গে চলছে সৌদি সরকার

soudiতেলের ক্রমবর্ধমান দরপতনের মধ্যেও নিজেদের পরিকল্পিত সব ব্যয় অব্যাহত রাখতে ইচ্ছুক সৌদি আরবকে এখন তাদের বৈদেশিক রিজার্ভে হাত দিতে হচ্ছে। ফলে গত দুই মাসে দেশটির রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলার কমেছে, যা মোট রিজার্ভের ৫ শতাংশ।

সৌদি আরবের নতুন বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল-সৌদ সরকারি খাতের কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ ও বড় প্রকল্পগুলোর অর্থ জোগাতে দুর্যোগকালীন তহবিলের অর্থ খরচের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণ বাড়িয়েছেন।

chardike-ad

সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা গেছে, মার্চে সৌদি আরবের বৈদেশিক রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলার কমে ৭০৮ বিলিয়নে নেমেছে। গত জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর ঐতিহ্য মেনে সরকারি কর্মকর্তাদের বোনাস দেয়ার জন্য রিজার্ভে হাত দিতে হয় তাকে। গত অক্টোবরের পর থেকে দেশটি রিজার্ভ থেকে মোট ৪৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।

চলতি সপ্তাহে সৌদি বাদশা রাজ আদালত ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তন এনেছেন। শ্রমমন্ত্রী আদেল আল-ফাকিহকে অর্থনীতি ও পরিকল্পনা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি কোম্পানি সৌদি অ্যারামকোর প্রধান নির্বাহী খালিদ আল-ফালিহকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক জটিলতাগুলো মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেয়ারই আভাস দিয়েছেন তিনি। শ্রমমন্ত্রী থাকাকালে নিজ বিভাগে যে সংস্কার করেছিলেন ফাকিহ, অর্থনীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়েও তিনি পরিবর্তন আনবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে তাল রেখে তিনি একটি সমন্বিত উন্নয়ন নীতি গ্রহণ করবেন, যা দীর্ঘদিন করা হয়নি।

অন্যদিকে রাষ্ট্রের বাজেটের এক-পঞ্চমাংশ ব্যয় হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। সৌদি বাদশা আশা করছেন, অ্যারামকোর সাবেক নির্বাহী তার প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা ব্যবহার করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে পুনর্গঠন করতে পারবেন।

এসব পরিবর্তন ঘোষণাকালে বাদশা সালমান জানিয়েছেন, ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে মাসব্যাপী লড়াইরত সেনাকর্মকর্তাদের বোনাস দেয়া হবে।

আবুধাবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ মনিকা মালিক মনে করেন, ‘সেনাবাহিনীকে বোনাস দেয়া হলে দেশটির রিজার্ভে আরো টান পড়বে। ফলে সৌদি সরকারকে এখন থেকে যৌক্তিকভাবেই ব্যয় করতে হবে।’

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পক্ষ থেকেও সতর্ক করে বলা হয়েছে জাতীয় রিজার্ভ অটুট রাখতে বেতন ও ভর্তুকিতে উপসাগরীয় দেশগুলোকে ব্যয়সংকোচন করতে হবে।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের স্টিফেন হার্থগও মনে করছেন, সেনাবাহিনীকে বোনাস দেয়ার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক কোনো লক্ষণ নয়।

রিজার্ভ হ্রাস ও অভ্যন্তরীণ ঋণের ফলে সৌদি আরবের বাজেট ঘাটতি ফুলে ফেঁপে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে চলতি বছর দেশটির বাজেট ঘাটতি থাকবে ১০০ বিলিয়ন ডলার।