গত শুক্রবার সিউলে বাংলাদেশী তরুণ আব্দুল্লাহ’র মৃত্যু নিয়ে চলছে বিতর্ক। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে আব্দুল্লাহ’র আত্মহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। শুক্রবার কোরিয়ার প্রধান বার্তা সংস্থা ইউনহাপসহ অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমগুলো স্টেশন পুলিশের বরাত দিয়ে আব্দুল্লাহ’র মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করে। রিপোর্টগুলোতে ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়। এর বাইরে বিস্তারিত কোন তথ্য জানানো হয়নি। পত্রিকারগুলোর ইংরেজি ভার্সনেও সংবাদটি প্রচার করা হয়নি।
আব্দুল্লাহ’র পরিচিত বাংলাদেশী প্রবাসীরা তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলতে নারাজ। আব্দুল্লাহকে ফেসবুকে বৃহস্পতিবার রাত ১টায় শেয়ার দিতে দেখা যায়। আগেরদিন রাতে কথা ফোনে কথা বলা শেখ ফিরোজ হোসাইন জানান তাঁর সাথে কথাবার্তায় খুবই স্বাভাবিক মনে হয়েছে। আত্মহত্যা করার মতো কোন লক্ষণ ছিলনা। তাছাড়া উনি আত্মহত্যা করার মতো লোক নন। আরেক প্রবাসী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন ‘আব্দুল্লাহ অনেক ধার্মিক একজন ব্যক্তি। প্রচন্ড অসুস্থ অবস্থায়ও তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেছেন। তাঁর মৃত্যু দুর্ঘটনা হতে পারে, আত্মহত্যা নয়’।
কোরিয়ান পুলিশ আব্দুল্লাহ’র মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করে বলেছে ট্রেনটি জুংআং স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার পর হঠাৎ একজনকে রেললাইনের উপর পড়ে যেতে দেখা যায়। এর বেশি কিছু এখনো জানায়নি পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত করলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে।
কনকুক বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মোহাম্মদ আল আমিন আব্দুল্লাহকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি আব্দুল্লাহ’র মৃত্যু প্রসঙ্গে কোরিয়ান পুলিশের সমালোচনা করে পুলিশের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েও না পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন। স্ট্যাটাসের কমেন্টে আত্মহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বুসান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডঃ আশরাফ রাসেলও।
আব্দুল্লাহ’র মৃত্যু দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা তা তদন্তের মাধ্যমে কোরিয়ার পুলিশের কাছে বের করে আনাই এখন সময়ের দাবি। তদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে সত্য বেরিয়ে আসলে হয়ত আব্দুল্লাহ আর ফিরে আসবে না কিন্তু তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিয়ে তাঁর প্রতি অবিচার করা থেকে মুক্ত তাকে করা যাবে। কোরিয়ান পুলিশকে চাপ প্রয়োগ করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে পারে কোরিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। অন্যান্য প্রবাসীদের মত এবার আব্দুল্লাহর জন্যও কিছু করবে দুতাবাস এমনটি আশা করছেন কোরিয়া প্রবাসীরা। তাছাড়া বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ তৎপর হলে তদন্ত রিপোর্ট দ্রুত বের করে আনা সম্ভব বলে মনে করেন অনেকেই।