যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে নিউ হ্যাম্পশায়ারে প্রাইমারি ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির নেতারা সেখানে নিজ দলের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। গত সপ্তাহে আইওয়ায় অনুষ্ঠিত প্রাইমারি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকানদের মধ্যে টেড ক্রুজ বিজয়ী হন। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নিউ হ্যাম্পশায়ারের ফলাফল অন্য রাজ্যগুলোর ভোটারদের প্রভাবিত করবে। খবর লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস।
নিউ হ্যাম্পশায়ারে সুইং অথবা দলনিরপেক্ষ ভোটারের সংখ্যা বেশি। শেষ মুহূর্তে এরা যেকোনো প্রার্থীর পক্ষে যেতে পারেন। শেষ মুহূর্তের জনমত জরিপে দেখা গেছে, রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউ হ্যাম্পশায়ারে বিজয়ী হতে পারেন। গত সপ্তাহে আইওয়ার নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় হয়েছিলেন। নিউইয়র্কের এ আলোচিত ব্যবসায়ী নিউ হ্যাম্পশায়ারে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। ম্যানচেস্টারে সোমবার রাতে নির্বাচনী সমাবেশে তিনি ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, কালই শুরু হবে। আমাদের বড় জয় অর্জন করতে হবে।
নিউ হ্যাম্পশায়ারের ভোটাররা রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নের বিষয়টি ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঠেলে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প, টেড ক্রুজ ও ওহাইওর গভর্নর জন কাশিচের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হতে পারে।
এদিকে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়নের ক্ষেত্রে নিউ হ্যাম্পশায়ার আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমিয়ে তুলতে পারে। সর্বশেষ জনমত জরিপগুলোয় ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের মধ্যে ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এগিয়ে ছিলেন। প্রতিবেশী রাজ্যটির সিনেটর যদি নিউ হ্যাম্পশায়ারে জেতেন, তাহলে হিলারি ক্লিনটন ও তিনি প্রায় সমপর্যায়ে থাকবেন। এর আগে আইওয়ার প্রাইমারিতে হিলারি ক্লিনটন জিতলেও দুজনের মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল।
২০০৮ সালেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিনেটর হিলারি ক্লিনটন। সেবার তিনি নিউ হ্যাম্পশায়ারে জনমত জরিপে তত্কালীন সিনেটর বারাক ওবামার চেয়ে ১০ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিলেন। নিউ হ্যাম্পশায়ারের পূর্ববর্তী রাজ্য আইওয়ায় বারাক ওবামা আগেই জয় পেয়েছিলেন। কিন্তু নিউ হ্যাম্পশায়ারে সব জরিপকে মিথ্যা প্রমাণ করে হিলারি ক্লিনটন বারাক ওবামাকে হারাতে সমর্থ হয়েছিলেন। চলতি দফায়ও হিলারি ক্লিনটন সে চেষ্টাই করছেন। সোমবার সর্বশেষ জনসভায় হিলারি ক্লিনটন ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জোর আহ্বান জানান।
ম্যানচেস্টারের ওই জনসভায় হিলারি ক্লিনটন বলেন, আমরা ভালো অবস্থায় আছি। সঠিক নেতৃত্ব পেলে অতীতের মতো এবারো ভবিষ্যতকে করায়ত্ত করা সম্ভব।
হিলারি ক্লিনটন ভোটারদের কাছে জাতীয় পর্যায়ে নীতি প্রণয়নে তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। সাবেক এ ফার্স্ট লেডি আরো বলেন, শুধু মনে মনে চাইলেই কাজটি সম্পন্ন হবে না। এজন্য কাজ করতে হবে।
এদিকে প্রচারণার শেষ দিনে বার্নি স্যান্ডার্স কোনো জনসভায় অংশ নেননি। দিনভর বিভিন্ন স্থানে তিনি ভোটারদের সঙ্গে করমর্দন ও কুশল বিনিময় করেন।