search
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে নাম চূড়ান্ত করতে সার্চ কমিটির তৃতীয় বৈঠক  শেষ হয়েছে। পরবর্তী বৈঠক ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে সুপ্রিমকোর্ট জাজেস লাউঞ্জে এ বৈঠক শুরু হয় এবং সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় শেষ হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবদুল ওয়াদুদ সাংবাদিকদের বলেন, আজকের বৈঠকে ২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের অতীত ইতিহাস কর্মকাণ্ড (ব্যাকগ্রাউন্ড) নিয়ে এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের দেওয়া পরামর্শ নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন কমিটির সদস্যরা।
আজকের বৈঠকটি এ কমিটির নিজেদের মধ্যে তৃতীয় বৈঠক ছিল। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে পাওয়া প্রস্তাব থেকে অনুসন্ধান কমিটি ২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছে। তাঁদের ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করার লক্ষ্যে আজ বৈঠকে বসেন কমিটির সদস্যরা।
এর আগে বুধবার সার্চ কমিটি চার বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বৈঠক করে।
এদিকে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে বিশিষ্ট নাগরিকদের  মতামত গ্রহণ শেষ করেছে কমিটি। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দল থেকে ইসির জন্য নামের প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়েছে। ১২৫ নাম থেকে ২০ জনের সর্ট (ছোট) তালিকাও করেছে সার্চ কমিটি। এখন সেখান থেকে ১০ জনকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করে বঙ্গভবনে পাঠানোর পালা। আর এ জন্য ছয় সদস্যের ইসি সার্চ কমিটি আজ বৈঠকে বসেছে বলে জানা যায়।
বুধবার যে চার বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বৈঠক হয়, তারা হলেন- সাবেক সিইসি মোহাম্মদ আবু হেনা, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটির সঙ্গে তাদের বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও বিধি) আবদুল ওয়াদুদ সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় এই জাজেস লাউঞ্জেই আবার বসবেন সার্চ কমিটির ছয় সদস্য।
তিনি বলেন, আজকে মতামত দিতে আসা বিশিষ্ট চার ব্যক্তি যেসব ব্যক্তির ক্লিন ইমেজ আছে, প্রশাসনিক দক্ষতা আছে, দায়িত্ব পালনের জন্য শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা আছে এবং যারা চাপের মুখে মাথা নত করবেন না, তাদের নির্বাচন কমিশনে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
বিশিষ্ট চার ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠকে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে সার্চ কমিটির বাকি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত সোমবার সার্চ কমিটির বৈঠকে দেশের ১২ বিশিষ্ট নাগরিক নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে দক্ষ, সৎ, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার জন্য পরামর্শ দেন।
ওইদিনই আরও পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অর্থ আত্মসাতের মামলার আসামি হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার গতকাল মঙ্গলবার তালিকা থেকে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.)আবদুর রশিদের নাম বাদ দেয় সার্চ কমিটি।
এর আগে ইসি গঠনে ৩১টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঁচজন করে নাম চায় সার্চ কমিটি। এতে সারা দিয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৩টার মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সরকারের প্রধান বিরোধী বিএনপিসহ ২৭টি দল নামের তালিকা জমা দেয়। তবে নাম দেয়া থেকে বিরত থাকে চারটি রাজনৈতিক দল। এছাড়াও কমিউনিস্ট পার্টি চিঠি দিয়ে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠনের প্রক্রিয়ার বিরোধা করে এবং নাম প্রস্তাব থেকে বিরত থাকে।
তবে ২৭টি দলের পাঁচজন করে দেয়া ১২৫ জনের নাম থেকে ২০জনকে প্রথমিকভাবে বাছাই করে সার্চ কমিটি।
এর আগে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ ২৫ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেন।
কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, মহাহিসাব নিরীক্ষক (সিএজি) মাসুদ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি শিরীণ আখতার।
সার্চ কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য নাম প্রস্তাবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের সুপারিশ থেকেই অনধিক পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্চ কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দিচ্ছে।