Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

বিমান বিধ্বস্তের কারণ উদ্ঘাটনে ছয় মাস সময় চায় নেপাল

us-bangla-crashকাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা’র বিমান বিধ্বস্তের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে এখনও দাফতরিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে নেপাল সরকারের গঠিত তদন্ত কমিটি এখনও এ সম্পর্কে কোনও প্রাথমিক তথ্য দিতে পারেনি।

১২ মার্চ (সোমবার) ত্রিভুবন বিমানবন্দরে চার ক্রুসহ ৭১ আরোহী নিয়ে ইউএস-বাংলা’র বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৫১ জন নিহত হন। বিমানটির আরোহীদের মধ্যে ৩৬ জন বাংলাদেশি এবং ৩৩ জন নেপালি নাগরিক ছিলেন। এছাড়া চীন ও মালদ্বীপের একজন করে নাগরিক আরোহী ছিলেন।

chardike-ad

দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত নেপালি তদন্ত কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন দেশটির সংস্কৃতি, পর্যটন ও বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বুদ্ধি সাগর লামিছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) বুদ্ধি সাগর লামিছেন বলেন, ‘ছয় মাসের মধ্যে দুর্ঘটনার নেপথ্যের কারণ পরিষ্কার হবে। ’

এ পর্যন্ত তদন্তের অগ্রগতি কী? এমন প্রশ্নের উত্তরে বুদ্ধি সাগর লামিছেন বলেন, ‘তদন্ত চলছে। এখনও আমরা কারণ শনাক্ত করতে পারিনি। ছয় মাসের মধ্যে আমরা তদন্ত সম্পন্ন করবো। এই সময়সীমার চেয়ে বাড়তি সময় নিতে হবে না।’

নেপালি তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব বলেন, ‘এরইমধ্যে আমরা দুর্ঘটনাস্থল পুনরায় পরিদর্শন করেছি। এখন আমরা আহত ব্যক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলছি। প্রমাণ সংগ্রহ করছি। এয়ারলাইন্সটির কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’

তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার শিকার বিমানটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোম্বারডিয়ার-এর প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ থেকে আসা তদন্ত টিম আমাদের সঙ্গে কাজ করছে।’

বুদ্ধি সাগর লামিছেন বলেন, ‘ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার (ব্লাক বক্স) আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। আমরা ইলেকট্রনিক রেকর্ডিং ডিভাইস থেকে ডেটা শনাক্তকরণে মার্কিন বিমান সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থার (আইসিএও) কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারি। এটা দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয়ে সহায়ক হবে।’

এয়ার কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে কি পাইলটকে অস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে বুদ্ধি সাগর লামিছেন বলেন, ‘প্রকৃত কারণ সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত নই। এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করতে পারছি না। তবে আমরা সম্ভাব্য প্রতিটি দৃষ্টিকোণ থেকে দুর্ঘটনার তদন্ত করছি।’

দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ শুক্রবারের (১৬ মার্চ) মধ্যে পোস্টমর্টেমের কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৫ জনের মরদেহের পোস্টমর্টেম সম্পন্ন হয়েছে।

ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি টিচিং হসপিটাল (টিইউটিএইচ)-এর ফরেনসিক বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ড. প্রমোদ শ্রেষ্ঠ। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তারা তিন জনের মরদেহ পোস্টমর্টেম করেছেন। শুক্রবারের মধ্যে সব মরদেহের পোস্টমর্টেম সম্পন্ন হবে।

তিনি বলেন, ‘পোস্টমর্টেমের পাশাপাশি আমরা ফ্লাইট ক্যাপ্টেন এবং কো-পাইলটসহ বিমানের ক্রুদেরও টক্সিকোলজি পরীক্ষা পরিচালনা করছি। তাদের মধ্যে কোনও বিষাক্ত বা বিষক্রিয়াগত প্রভাব ছিল কিনা তাও পরীক্ষা করা হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই এ প্রতিবেদন আমাদের হাতে এসে পৌঁছাবে।’

চিকিৎসকরা কি ক্রুদের শরীরে বিষক্রিয়াজনিত ক্ষতচিহ্নের কোনও প্রাথমিক অস্তিত্ব পেয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ড. প্রমোদ শ্রেষ্ঠ বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহে বিষক্রিয়ার প্রভাব পরীক্ষা করা একটি ইন্টারন্যাশনাল প্র্যাকটিস। ক্রুদের মারাত্মক রোগ বা হার্ট অ্যাটাকের বিষয়ে নিশ্চিত হতে হিসটোপ্যাথোলজি পরীক্ষাও করতে হবে।’

সৌজন্যে- বাংলা ট্রিবিউন