Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

যে কারণে আওয়ামী লীগ ছেড়েছিলেন ড. কামাল

kamal-hasina১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ১৪০টি আসনে বিজয়ী হয়েছিল। অপরপক্ষে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৮৮ আসন। পরে বিএনপি জামায়াতের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ হয় বিরোধী দল।

ওই নির্বাচনে ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের সঙ্গে ড. কামাল হোসেনও নিজের আসনে পরাজিত হয়েছিলেন। এ পরাজয় থেকেই কামাল হোসেনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব শুরু হয়।

chardike-ad

নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ‘সূক্ষ্ম কারচুপির’ অভিযোগ এনছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার ওই বক্তব্যের সঙ্গে একমত ছিলেন না ড. কামাল। নিজের পরাজয়ের পরেও তিনি বলেছিলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।

তার এ বক্তব্য থেকেই মূলত দলীয় প্রধানের সঙ্গে দূরত্বের শুরু। ওই বক্তব্যের পর কামাল হোসেনের গাড়িতে হামলা করা হয়েছিল। তাকে দলীয় সভা-সমাবেশে নানা প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করতে হচ্ছিল। তখনই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, বিকল্প কোনো উপায় তাকে বের করতে হবে।

তবে নির্বাচনের পর ড. কামাল হোসেন শেখ হাসিনাকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। দলীয় পরাজয়ের কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস। ওই চিঠির পর দু’জনের মধ্যে দূরত্ব প্রকাশ্যে আসতে থাকে।

পরে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা দলের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে আকস্মিকভাবে সব জেলার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দেন। শেখ হাসিনা সে চিঠিতে লেখেন, একটি মুখোশধারী চক্র দলে ফাটল ধরাবার চেষ্টা করছে।… নানা কৌশলে, সস্তা, সেন্টিমেন্টমূলক বক্তব্য দিয়ে প্রকাশ্যে -অপ্রকাশ্যে আজ আমার ও আওয়ামী লীগের ইমেজকে খাটো করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনার ওই চিঠিতে নির্দিষ্ট করে কারো নাম উল্লেখ না করা হলেও, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা ধরে নিয়েছিলেন যে ড. কামাল হোসেন সে চিঠির লক্ষ্যবস্তু। ১৯৯২ সালে ওই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ড. কামাল হোসেন।

এর কয়েক মাসের মধ্যেই ড. কামাল হোসেন একটি স্বতন্ত্র ফোরাম গঠন করেন। ‘গণতান্ত্রিক ফোরাম’ নামের এ অরাজনৈতিক ফোরাম নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হবার পরেও কেন ড. হোসেন গণতান্ত্রিক ফোরাম গঠন করলেন সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে থাকে।

এর কয়েক মাস পর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আর প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদ থেকে বাদ পরেন ড. কামাল হোসেন। পরে তাকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়। কিন্তু তিনি তাতে সন্তুষ্ট ছিলেন না।

১৯৯৩ সালে ড. কামাল হোসেনের রাজনৈতিক দল গড়ার উদ্যোগ সামনে আসে। অগাস্ট মাসের শেষ দিকে গণতান্ত্রিক ফোরামের তিন দিনব্যাপী জাতীয় মহাসম্মেলন আহ্বান করা হয়। এ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গণফোরাম গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়।

এর আগে ওই দিন সকালে ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন। তার পদত্যাগের চিঠি দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়।