Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

উত্তর কোরিয়া আসলে কার হয়ে খেলছে?

North-South-Koreaগত ৫ জানুয়ারি উত্তর কোরিয়া ভূগর্ভে হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে। ২০১৩-এর ফেব্রুয়ারির পর এটা হলো দেশটির আরেক দফা বিধ্বংসী অস্ত্র পরীক্ষা। প্রশ্ন হলো, দেশটির এই ঘোষণায় খুশি হয়েছে কারা এবং লাভবান হচ্ছে কারা? যদিও সর্বশেষ বোমাটি প্রকৃতই হাইড্রোজন বোমা কি না, এই নিয়ে বিস্তর অনুসন্ধান চলছে কিন্তু ইতিমধ্যে এই বোমা বিস্ফোরণের ঘোষণার সরাসরি প্রতিক্রিয়া ঘটে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নির্মাণ খাতে। যুক্তরাষ্ট্রের যেসব রাজনীতিবিদ অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে নিবিড় সখ্য রাখেন, তারা জোরেশোরে এখন মিসাইল ডিফেন্স খাতে বাড়তি বিনিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন। পাশাপাশি তারা প্রশান্ত মহাসাগরে আরও বেশি ঘাঁটি স্থাপনেরও সুপারিশ করেছেন। শেষের সুপারিশটি বাস্তবায়নে সময় লাগলেও শিগগির যে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ায় লকহিড মার্টিন মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম পাঠাচ্ছে এটা নিশ্চিত।

১৯৯০ থেকে কেবল উত্তর কোরিয়ার বোমাভীতি ছড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই দলের রাজনীতিবিদেরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঠেলে দিয়েছেন অস্ত্র নির্মাতাদের পকেটে। ইতিমধ্যে কোরিয়ার পারমাণবিক মিসাইল সামাল দেওয়ার লক্ষ্যে সুরক্ষাকাঠামো গড়ে তুলতে ৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়ে গেছে। এ থেকে লাভবান হয়েছে লকহিড মার্টিন, বোয়িং, রেথেয়ন ইত্যাদি বড় বড় কোম্পানি। এসব কোম্পানি সেখানে রাজনীতিবিদদের নির্বাচনী ফান্ডের বড় দাতা। কেবল যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নির্মাতারা কোরিয়ার ঘটনায় লাভবান তা-ই নয়, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার অনুরূপ ব্যবসায়ীরাও এটাকে উদ্দীপনাময় ঘটনা হিসেবে দেখছে।

chardike-ad

পুরো ব্যাপারটি চীনের বিপক্ষে যাচ্ছে। উত্তর কোরিয়া ভীতি ছড়িয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান সামরিক উপস্থিতি চীনের জন্য বিপজ্জনক। উপরন্তু চীন এইরূপ শক্তিশালী বোমা-পরীক্ষার পরিবেশগত প্রতিক্রিয়া নিয়েও উদ্বিগ্ন। সর্বশেষ হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষাস্থল চীন সীমান্ত থেকে মাত্র ৬০ মাইল দূরে। আন্তর্জাতিকভাবে যদিও উত্তর কোরিয়ার প্রধান মিত্র হিসেবে চীনকে বিবেচনা করা হয়, কিন্তু বাস্তবে এই সম্পর্ক এখন শীতল যাচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার বর্তমান ‘কিম’ ক্ষমতাসীন হয়ে একবারও চীন সফর করেননি। অথচ তার ক্ষমতাসীনকালে দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে চীনের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের অন্তত ছয় দফা রাষ্ট্রীয় বৈঠক হয়ে গেছে। উত্তর কোরিয়ার রহস্যময় অস্ত্রকৌশল সামাল দিতে চীন এখন দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব সীমিত করতে তৎপর।