Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

যাত্রীসহ বিমান ফেলে ব্যক্তিগত শপিংয়ে দুই পাইলট!

Biman-Bangladesh-Airlinesবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুই পাইলট ককপিটের দরজা লাগিয়ে যাত্রী বোঝাই একটি ফ্লাইট ফেলে সাম্প্রতি নিজেদের ব্যক্তিগত কেনাকাটা করতে ডিউটি ফ্রি শপে গিয়েছিলেন। তখন উড়োজাহাজটির এপিইউ (অক্সিলারি পাওয়ার ইউনিট) সচল ছিল। চালু ছিল ইঞ্জিনসহ বিমানের সবগুলো অংশ। চিফ পার্সারের নেতৃত্বে কেবিন ক্রুরা ব্যস্ত ছিলেন যাত্রীদের আসন বসানোর কাজে। কিন্তু ছিলেন না ফ্লাইটের মূল কমান্ডিং অফিসার দুই পাইলট। ঘটনাটি অবিশ্বাস্য হলেও সত্য।

এটি ঘটেছে চলতি মাসের শুরুর দিকে ব্যাংককের সুবর্ণভূমি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। প্রায় ২০ দিন আগে ঘটনাটি ঘটলেও বিমান ম্যানেজমেন্ট এ ব্যাপারে কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

chardike-ad

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ আশীষ রায় চৌধুরী বলেন, কোনো ফ্লাইটের এপিইউ চালু থাকা অবস্থায় অবশ্যই ককপিটে পাইলটকে বসে থাকতে হবে। তাছাড়া ফ্লাইটের ভেতরে যাত্রী ছিলেন। যে কোনো সময় উড়োজাহাজে আগুন লাগতে পারত অথবা অন্য কোনো নিরাপত্তাজনিত দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। এ অবস্থায় ককপিটে পাইলট না থাকলে কে সামাল দিত উড়োজাহাজ। তাছাড়া এয়ারক্রাফটের সব ধরনের সুইচ থাকে ককপিটে। ফ্লাইটের নিচে থাকা গ্রাউন্ড সার্ভিস বিভাগের মেকানিকদের সার্বক্ষণিক ওয়্যারলেসে পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়। এরকম অবস্থায় ককপিটে পাইলট না থাকলে, যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

তিনি বলেন, এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তার মতে বিমানের ব্যবস্থাপনা বিভাগ এখন দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। লোডার, হেলপার, মেকানিক আর পোকা মারার পাইলট দিয়ে চলছে বিমান ম্যানেজমেন্ট। ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিয়মের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জানা গেছে, ব্যাংকক থেকে ট্রেনিং শেষ করে আসা সিভিল এভিয়েশনের ওই এফওআই’র (ফ্লাইট অপারেশন ইন্সপেক্টর) নাম হচ্ছে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন আহমেদ এবং শীর্ষ কর্মকর্তা হলেন বিমানের ফ্লাইট সেফটি বিভাগের চিফ অফ সেফটি শোয়েব চৌধুরী। ঘটনার দিন তারা ফ্লাইটে প্রবেশ করে কিছুক্ষণ পর পাইলট ও কো-পাইলটের সঙ্গে দেখা করতে ককপিটে যান। কিন্তু ককপিটের দরজা লাগানো দেখে কেবিন ক্রুদের কাছে পাইলটদের অবস্থান জানতে চান।

এ সময় একজন ক্রু ককপিটের দরজা খুলে দিলে তারা ককপিটে প্রবেশ করে আঁতকে উঠেন। ককপিট তখন শূন্য। বাম পাশের চেয়ারে বসা ক্যাপ্টেন আর ডান পাশের চেয়ারে বসা কো- পাইলট (ফার্স্ট অফিসার) কেউ নেই। এরপর পুরো ফ্লাইট খোঁজাখুঁজি করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

পরে জানা গেছে, তারা ব্যাংকক বিমানবন্দরের ডিউটি ফ্রি শপে মার্কেটিং করতে গেছেন। তখন পুরো ফ্লাইট যাত্রী বোঝাই হয়ে গেছে। ব্যাংকক বিমানবন্দরের গ্রাউন্ড সার্ভিস বিভাগের লোকজন রি-ফুয়েলিং (জ্বালানি তেল ভরা) শেষ করে চাকার সেফটি পিন খোলা ও পুশকার্ড মেশিন চালুর জন্য পাইলটকে ওয়াকিটকিতে কল দিচ্ছিলেন।

কিন্তু ওই প্রান্ত থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় ফ্লাইট থেকে জরুরি ভিত্তিতে দুই পাইলটকে তলব করা হয়। দীর্ঘ সময় পর তারা হন্তদন্ত হয়ে ফ্লাইটে আসেন। এরপর কোনো ধরনের রাউন্ড না দিয়েই তারা সরাসরি ফ্লাইটে এসে নিজদের আসনে বসেন।