বুধবার । ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট জাতীয় ৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:১১ অপরাহ্ন
শেয়ার

মহান বিজয় দিবস উদযাপনে বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রস্তুতি


16 december Gueniess record

মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদযাপনকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবারের কর্মসূচির মধ্যে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হিসেবে থাকছে ৫৪ জন প্যারাট্রুপারের পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং—যা স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশ্বরেকর্ড হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লেখাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটিই হবে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিংয়ের ঘটনা।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই বিশেষ প্যারাস্যুটিং শো ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার পুরাতন বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে সকাল ১১টা থেকে তিন বাহিনী পৃথকভাবে ফ্লাই-পাস্ট মহড়া ও ব্যান্ড-শো পরিচালনা করবে। সব আয়োজন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরেও একই ধরনের ফ্লাই-পাস্ট আয়োজন করা হবে।

আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বিজয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। এতে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা। সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর পক্ষ থেকে বিশেষ কর্মসূচি উপস্থাপন করা হয় এবং সারাদেশব্যাপী আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবারও তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলা দেশের সব জেলা-উপজেলায় অনুষ্ঠিত হবে। শিশুদের অংশগ্রহণে রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ১৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আ্যাক্রোবেটিক শো এবং যাত্রাপালা ‘জেনারেল ওসমানী’ মঞ্চস্থ করবে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের গান পরিবেশিত হবে একই স্থানে আর সারাদেশের ৬৪ জেলায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করবেন নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা।

সভা শেষে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, বিজয় দিবস বাংলাদেশের গৌরবময় দিন, এবং এবারের উদযাপনে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এবারের বিজয় দিবস নতুন প্রজন্মের জন্য এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে, যেখানে থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাত্রাপালা, কনসার্ট এবং পুরাতন বিমানবন্দরে এয়ার শোসহ নানা আয়োজন।

বিজয় দিবস উপলক্ষে তথ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আলোকসজ্জা করা হবে। প্রতিবারের মতো এবারও একত্রিশবার তোপধ্বনি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ অনুষ্ঠান এবং জেলা-উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা, পায়রা বন্দরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।

এ ছাড়া সিনেমা হলে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন, মিলনায়তন ও উন্মুক্ত স্থানে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, জাদুঘর ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো শিশুদের জন্য বিনা টিকিটে উন্মুক্ত রাখা হবে। সারাদেশের মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও নানা উপাসনালয়ে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য কামনায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন থাকবে।