Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক জীবন

সিউল, ১৮ মে ২০১৪:

এক হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এক সংগ্রামী পরিশ্রমী রাজনৈতিক কর্মীর নাম নরেন্দ্র মোদি। মা অন্যের বাসায় বাসন মাজতেন বাবা চা বিক্রি করতেন নিজেও তাই করেছেন। সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। কিছু দিনের জন্য সেখানে কাজও করেন। তার পর তিনি যান রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ন্যাসী হতে। তার পর চায়ের দোকানে ব্যবসা ছেড়ে আরএসএসের প্রচারক হওয়া।

chardike-ad

downloadছোট বেলায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের কর্মী হিসেবে ঘর ছেড়েছিলেন। বাবা ছোট বেলায় বিয়ে দিলেও কোন দিনই সংসার করেননি মোদি। সবাই জানতো তিনি বিয়ে করেননি। বারনসিতে মনোনয়ন পত্রের ফরমে তিনি প্রথম তার স্ত্রীর নাম লেখেন। ঘর ছাড়া আরএসএস প্রচারক নরেন্দ্র মোদি যোগ দেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি)। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে তিনি আর পেছনে ফিরে তাকাননি। কঠোর পরিশ্রম আর যোগ্যতা দিয়ে পার্টিতে তার অবস্থান করে নেন । সেই সময়ই জানান, তিনি আসছেন। প্রথমে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক, তার পর হিমাচলপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা থেকে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। তিন তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী। তার পর শুধুই উত্থান। তার নেতৃত্বেই আজ বিজেপি গোটা ভারতে এক অভাবনী সাফল্য পেয়েছে। ৩০ বছর পর ভারত পেয়েছে লোকসভায় একক কোন দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা। এই বিপুল সাফল্যের পর গতকাল ভাদোদরায় দাঁড়িয়ে মোদি জানিয়ে দিলেন, ‘রাজনীতিতে ও গণতন্ত্রে প্রতিপক্ষ হয়। কিন্তু কেউ শত্রু হয় না।’

এ এক অসাধারণ ব্যক্তিত্বের উত্থান কাহিনী। মোদিকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করতে রাজি ছিলেন না লালকৃষ্ণ আদভানী। কিন্তু সেপ্টেম্বরে মোদির নাম প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হওয়ার পর সেই আদভাণী এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘মোদিই প্রধানমন্ত্রী হবেন।’ কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছিলেন, ‘কোনও ব্যক্তির অভিলাষ যদি নির্ভেজাল হয় আর খুব তীব্র ইচ্ছা শক্তি থাকে, তবে একটা মানুষ তাঁর লক্ষ্যে সফল হবেই।’

২০০২ সাল কেশুভাই প্যাটেল তখনও গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতরের একটি খুপরি ঘরে থাকতেন তিনি। তখন বিধায়কদের বিদ্রোহ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিক্ষুব্ধরা ফ্যাক্সে বাজপেয়ী-আদভাণীর কাছে মুখ্যমন্ত্রী বদলের আবেদন জানাচ্ছেন। সে রকম একটি দিনে দিলি¬র এক হোটেলে বসে আজকের ভাবী ভারতের প্রধানমন্ত্রী এক সাংবাদিককে বলেছিলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী আমি হবই। কেন না আমার চরিত্রের সব চেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল, আমি খুব ‘ফোকাসড’। আপাতত মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কয়েক বছরের মধ্যেই গুজরাটকে বদলে দেব।’

২০০২ সালে গুজরাটের পর দেশ জুড়ে ঝড় ওঠে। সে দিন থেকে সাম্প্রদায়িকতার বদনাম মোদিকে তাড়া করেছে। তাঁর প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে সংখ্যালঘু জনসমাজ এবং দেশের ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিক সমাজের কাছে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করা। তিনি আজকের বিজয় প্রমাণ করতে পেরেছেন।

রাজনাথ, সুষমা, অরুণ জেটলিসহ অনেকেই নিজেদের প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে ভাবতে শুরু করেন। আর এস এস পরিবার বুঝতে পেরেছিল মোদির জনপ্রিয়তা দল এবং সংগঠনের অন্দরে কতটা। তাই নীতিন গড়কড়ি বা রাজনাথ সিংরা আরএসএসের বশংবদ হলেও সঙ্ঘ পরিবার বুঝতে পারে, বাজপেয়ী-আদভাণী যুগের অবসানের পর বিজেপিতে নতুন যুগ আনতে পারেন এক মাত্র মোদিই।’