Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

দেশে করোনায় মৃত্যু হাজার ছাড়াল, নতুন শনাক্তেও রেকর্ড

nasimaবাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়ে গেল। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৩৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ১২ জনে। এছাড়া এসময়ে নতুন শনাক্তের তালিকায় একদিনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ১৯০ জন মানুষ যুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ৭৪ হাজার ৮৬৫জন। আর নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫৬৩ জন। আজ বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ টি ল্যাবে একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ৯৯৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আর পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৬৫টি, যা একদিনে সর্বোচ্চ পরীক্ষা। এর আগে গতকাল (৯ জুন) একদিনে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৬৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন পরীক্ষায় একদিনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ১৯০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগে গতকাল সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছিলেন ৩ হাজার ১৭১জন। এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫০৭ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪ হাজার ৮৬৫ জনে।

নাসিমা আরও জানান, এই সময়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ৩৭ জন। টানা দুদিন ৪২ মৃত্যু ও গতকাল একদিনে সর্বোচ্চ ৪৫ জনের মৃত্যুর খবর জানানোর পর আজ সে সংখ্যা কিছুটা কম। তার আগে গত ৩১ মে একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ১ হাজার ১২ জনের। এতে করোনায় এক হাজার জনের মৃতের দুঃখজনক মাইলফলক ছুঁইল বাংলাদেশ। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩৩ জন ও নারী ৪ জন। নতুন মৃতদের মধ্যে ঢাকার ২৫ জন ও চট্টগ্রামের ৭ জন ও রাজশাহী ১ , সিলেট ১ ও বরিশাল ২ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন।

তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৫৬৩ জন। এ নিয়ে মোট ১৫ হাজার ৮৯৯ জন সুস্থ হয়েছেন। ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারীতা নষ্ট করে দেয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর গুরত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।

এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৪ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ লাখ ১৮ হাজার ১২৪ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৬ লাখ ২ হাজার ৫৮০ জন। ইউরোপে তাণ্ডব চালানোর পর ভাইরাসটির সংক্রমণের কেন্দ্র দক্ষিণ এশিয়া ও আমেরিকা। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

করোনাভাইরাসের আক্রমণে সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২০ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৯। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৪৮ জনের। আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছে নেই কোনো দেশ।

করোনায় শনাক্ত মানুষের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ৭ লাখ ৪২ হাজার ৮৪। দেশটিতে করোনায় মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৩৮ হাজার। দেশটিতে করোনায় মোট ৩৮ হাজার ৪৯৭ জন মারা গেছেন।

করোনা রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। দেশটিতে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ২৫৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার ১৪২ জনের।

যুক্তরাজ্যজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত কমছে। দেশটিতে মোট ২ লাখ ৮৯ হাজার ১৪০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪০ হাজার ৮৮৩ জনে।

এদিকে বাংলাদেশের প্রতিবেশি ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২ লাখ ৭৬ হাজার ১৪৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৭ হাজার ৭৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৭০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email