বগুড়ার শেরপুরের জাহিদুল ইসলাম (৩০) নামের এক সৌদিপ্রবাসী দেশে ফিরেই অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন। ঢাকার উত্তরা থেকে শাহ ফতেহ আলী পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাসে বাড়ি যাওয়ার পথেই অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন তিনি। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে ভুক্তভোগী ওই প্রবাসীর স্ত্রী মোছা. জান্নাতি খাতুন শেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের ভদ্রপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম। পাঁচ বছর আগে সৌদি আরবে যান। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে দেশে আসেন তিনি। বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিমানযোগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে ঢাকার উত্তরায় যান। সেখানে অবস্থিত শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের কাউন্টার থেকে টিকিট নিয়ে সাড়ে ১১টার বাসে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু বাসের মধ্যেই প্রবাসী জাহিদুল ইসলামকে অজ্ঞান করে তাঁর কাছে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, হ্যান্ডব্যাগে থাকা আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল ফোন, তিনটি বড় ব্যাগভর্তি মালামাল লুটে নেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁর কাছে থাকা সৌদি রিয়াল ও ডলারের পরিমাণের বিষয়টি নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। এরপর অচেতন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেরপুর উপজেলার দশমাইল এলাকাস্থ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির সামনে ফেলে রেখে বাস চলে যায়।
ওই প্রবাসীর স্ত্রী মোছা. জান্নাতি খাতুন বলেন, মহাসড়কের পাশে স্বামীকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে খবর দেওয়া হয়। পরে তিনিসহ পরিবারের অন্যরা এসে তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে এখনো তাঁর জ্ঞান ফেরেনি।
প্রবাসীর স্ত্রী আরো বলেন, শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের ওই বাসের চালক ও তাঁর সহকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, জাহিদুল ইসলামের পাশে সিটের যাত্রীসহ দুজন যাত্রী টাঙ্গাইলের নেমে গেছে। এ ছাড়া কোথাও কোনো যাত্রী নামেনি। সম্ভবত তারাই অজ্ঞান পার্টির সদস্য। যাত্রীবেশে বাসে উঠে তাঁর পাশের সিটে বসে এবং কোনো কিছু খাইয়ে তাঁকে অচেতন করে ফেলে। এরপর সব কিছু লুটে নিয়ে নেমে গেছে বলে তাঁদের ধারণা।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা এবং খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই সেটি করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।