বিসিএসের কার্যক্রম শেষ হতে দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। ক্ষেত্রবিশেষে একটি বিসিএস শেষ করতে তিন বা চার বছর লেগে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বিসিএস প্রত্যাশীদের দাবি, এ সময় কমিয়ে আনা হোক। দ্রুত শেষ করা হোক কার্যক্রম।
সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) বলছে, ৩৫০ দিনের মধ্যেই বিসিএস শেষ করার পরিকল্পনা আছে তাদের। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্রুতই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।
পিএসসি ৪৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল ২০২১ সালের নভেম্বরে। ২০২২ সালের ২৭ মে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় অংশ নেন তিন লাখ ৫০ হাজার ৭১৬ জন। ১৫ হাজার ৭০৮ পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হন। একই বছরের ২৯ ডিসেম্বর শুরু হওয়া লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১১ হাজার ৭৩২ প্রার্থী।
২০২৪ সালে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হলেও তা বাতিল করে গত ৫ জানুয়ারি নতুন করে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পিএসসি জানিয়েছে, এখন যেভাবে কাজটি চলছে, সেভাবে চললে মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে এ বিসিএসে নিয়োগের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করতেই প্রায় চার বছর লেগে যাচ্ছে। এরপর নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে যাচাই (ভেরিফিকেশন), স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে চাকরির প্রজ্ঞাপন জারি হতে কমপক্ষে আরও এক বছর লাগবে। অর্থাৎ বিসিএসে চাকরি পেতে একজন তরুণকে কমপক্ষে চার বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
৪৪তম বিসিএসের পাশাপাশি ৪৫তম, ৪৬তম এবং ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার কার্যক্রমও চলছে। ৪৫তম বিসিএসের মাধ্যমে ২ হাজার ৩০৯ জন ক্যাডার নিয়োগ দেওয়া হবে। নন-ক্যাডারে নেওয়া হবে ১ হাজার ২২ জন। ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে ৪৫তম বিসিএসের আবেদনগ্রহণ শুরু হয়।
এ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ৩ লাখ ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থী আবেদন করেন। ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। একেকটি বিসিএস শেষ করতে এত দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়ায় চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে চলমান চারটি বিসিএসের কার্যক্রম শেষ করে পরবর্তী বিসিএস থেকে ৩৫০ দিনের মধ্যে যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনা করেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। এ জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম বলেন, ‘৪৮তম বিসিএস থেকে বছরে একটি বিসিএস শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এজন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে ৪৮তম বিসিএসের কার্যক্রম এক বছরের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে।’