বুধবার । ডিসেম্বর ১৭, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক জাতীয় ১৬ জুলাই ২০২৫, ৬:৪০ অপরাহ্ন
শেয়ার

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে নিহত ২


gopalganjগোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলা ও সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা দীপ্ত সাহা (২৫) এবং কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮)। নিহতদের মৃত্যুর বিষয়টি হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস জানান, আজ বুধবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে দুইজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁরা গুলিবিদ্ধ ছিলেন। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় আরও ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন, যাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অস্ত্রোপচার চলছে।

নিহত দীপ্ত সাহার চাচা জানান, দীপ্ত দুপুরে খাওয়া শেষে তাঁর দোকানে যাচ্ছিলেন। শহরের চৌরঙ্গী এলাকায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। অপর নিহত রমজান কাজীর বাবা কামরুল কাজী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। সে তো কোনো অপরাধ করেনি। আমি এখন আমার সন্তানকে কোথায় খুঁজব?’

গোপালগঞ্জ পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশ শেষে হঠাৎ করে হামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশ শেষ হতেই লাঠিসোঁটা হাতে একদল ব্যক্তি এনসিপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এনসিপি নেতা-কর্মীরা নিরাপদে সরে যান।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই এ হামলার পেছনে ছিলেন এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনী নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছে। তাঁর দাবি, আগে থেকে জানানো হয়েছিল পরিস্থিতি স্বাভাবিক, কিন্তু সমাবেশস্থলে এসে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।

বেলা পৌনে ২টার দিকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এনসিপির সমাবেশ শুরুর আগে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে হাজির হন। পুলিশ তখন আদালত চত্বরে সরে যায়, এবং এনসিপির নেতা-কর্মীরাও দৌড়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যান। হামলাকারীরা মঞ্চ ভাঙচুর করে ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। এনসিপি নেতাদের অভিযোগ, হামলাকারীরা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক।

একপর্যায়ে পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে পুলিশ ও এনসিপির কর্মীরা একত্রে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

এরপর বেলা ২টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। তাঁরা সেখানে সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষ হতেই আবারও হামলার ঘটনা ঘটে।