শনিবার । ডিসেম্বর ২০, ২০২৫
বাংলা টেলিগ্রাফ ডেস্ক জাতীয় ৩০ জুলাই ২০২৫, ১০:০৫ অপরাহ্ন
শেয়ার

পরবর্তী সরকারের জন্য সংস্কারের দাবি উপেক্ষা করা সহজ হবে না: আসিফ নজরুল


গণমানুষের আন্দোলন ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে আসা রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি ভবিষ্যৎ সরকারের পক্ষে আর উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

আজ বুধবার বিকেলে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশ-২০২৫’-এর খসড়া নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, হাজারো প্রাণের বিনিময়ে আসা পরিবর্তন ঠেকানো যাবে না এত ত্যাগ-তিতিক্ষার পর যদি সংস্কার না হয়, তাহলে আগামী দুই দশকেও আর পরিবর্তনের আশা করা যাবে না।

আসিফ নজরুল বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে, আরও বহু মানুষ হারিয়েছে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এত বড় ত্যাগ হয়নি। ফলে এই দাবিকে উপেক্ষা করা পরবর্তী সরকারের জন্য রাজনৈতিকভাবে খুবই কঠিন হবে।

তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, যদি এই মুহূর্তে সংস্কার সম্ভব না হয়, তাহলে আগামী দুই দশকেও সেই সুযোগ নাও আসতে পারে।

বিচার বিভাগ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক সরকারের বিচার বিভাগে কিছু প্রভাব থাকা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু যেটা ভয়াবহ, তা হলো—যখন কোনো নিরপেক্ষ কাঠামো গঠন হয়, যেমন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা, তা রাজনৈতিক স্বার্থে বাতিল করে দেওয়া হয়। এরকম সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রকে দুর্বল ও অকার্যকর করে তোলে।

তিনি জানান, এই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশ চূড়ান্ত করার আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেন তা টেকসই হয়।

আসিফ নজরুল বলেন, নিম্ন আদালতগুলোতে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে—সরকারি উকিল হওয়া সত্ত্বেও কেউ কেউ আর্থিক লোভে প্রতিপক্ষের হয়ে কাজ করেন। এটা সাধারণ মানুষের বিচার বিভাগের ওপর আস্থা মারাত্মকভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, নতুন এই অধ্যাদেশ কার্যকর হলে বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরে আসবে, আর সরকারি আইনজীবীদের দায়িত্ববোধও বাড়বে।

আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ প্রমুখ।