
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে না। তবে ফেরানো হয়েছে ‘না’ ভোটের বিধান। সোমবার সন্ধ্যায় ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ চূড়ান্তকরণ বিষয়ে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ।
তিনি জানান, সংশোধিত আদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইভিএম প্রকল্প আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। জোটগতভাবে নির্বাচন করলেও প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
‘না’ ভোটের বিধান প্রসঙ্গে সানাউল্লাহ বলেন, কোনো আসনে একমাত্র প্রার্থী থাকলেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া যাবে না। সেখানে ভোট গ্রহণ হবে এবং ভোটাররা ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। একই আসনে দুই প্রার্থী সমসংখ্যক ভোট পেলে লটারির পরিবর্তে পুনঃভোট অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও জানান, নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে নির্বাচন কমিশন চাইলে একটি কেন্দ্র, কয়েকটি কেন্দ্র বা পুরো আসনের ফলাফল বাতিল করতে পারবে। সংশোধিত আরপিওতে অনুমোদিত পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের বিধান রাখা হয়েছে। ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকতে পারবেন, তবে শর্ত সবার জন্য একই, গণনা শুরুর পর থেকে শেষ হওয়া পর্যন্ত পুরো সময় উপস্থিত থাকতে হবে, মাঝপথে বের হওয়া যাবে না।
নির্বাচনী প্রচারে আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ থাকলেও ডিজিটাল বিলবোর্ডে আলোর ব্যবহার চালুর সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রার্থীর ব্যয়ের হিসাবের ক্ষেত্রেও কঠোরতা আনার পরিকল্পনা করেছে ইসি। সানাউল্লাহ বলেন, প্রার্থীদের ব্যয় অডিট আরও সুনির্দিষ্ট ও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। কমিশন যেসব ক্ষেত্রে অনিয়মের আশঙ্কা দেখবে, সেগুলোতেই অডিট হবে। অনুদান গ্রহণের সীমা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উভয়ের জন্যই সমানভাবে ৫০ লাখ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শর্ত হলো, সব লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে হতে হবে এবং দাতার আয়কর রিটার্নে তা উল্লেখ করতে হবে।
এছাড়া, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বদলিতে ইসির ক্ষমতা আরও বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে গুজব, অপবাদ বা মিথ্যা তথ্য ছড়ানো ঠেকাতে প্রার্থী, দল, সংস্থা ও গণমাধ্যম—সব পক্ষের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান সংযোজনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও ইসি সচিব আখতার আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।






























